উত্তর দিনাজপুর : রায়গঞ্জ : ১৪ই ফেব্রুয়ারী, শুক্রবার : সমাজে নিত্য দিন যা ঘটেছে ও সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে গান বেঁধে তাতে সুর দিয়ে বাউল গান গাঁওয়াই বাউল বিনয় মহন্তের এখন মূল মন্ত্র। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের পুরিয়া উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামেই তার বড় হয়ে গানের জগতে প্রবেশ। পড়াশোনার নেশা তাকে বশ না করতে পারলেও ছোট থেকেই তাকে বাউল গান বশ করতে পেরেছে। বছর দশ থেকেই তার সঙ্গীত চর্চা শুরু হয়। বাউল সঙ্গীতে তার শিক্ষা গুরু ছিলেন স্বর্গত বলহরি দাস গোসাই, সদানন্দ মহন্ত, যতীন মহন্ত এবং দীপু সাধুর কাছ থেকে। পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হবার পর শ্বশুর স্বর্গত সুরেন্দ্র নাথ দাসের কাছে বেশ কিছু দিন বাউল সঙ্গীতের তালিম নেন। পরবর্তীতে বাউল সঙ্গীতের উপর তালিম গ্রহণ করেন স্বর্গত বীরেন্দ্র নাথ দাসের কাছে। বাউল শিল্পী বিনয় কৃষ্ণ মহন্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ২০০০ সালে এবং ২০০১ সালে কলকাতার জে এম ডি সাউন্ড কোম্পানী থেকে দুটি বাউল সঙ্গীতের আলব্যাম প্রকাশ করেন। আলব্যাম দুটির একটির নাম “কপালের নাম গোপাল” এবং অপরটির নাম “ভাবের ফুটবল”। আলব্যাম প্রকাশের পর বিনয় কৃষ্ণ মহন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য ডাক পেয়ে থাকেন বলে জানান।
একবার দুরদর্শনেও তিনি ডাক পেয়েছিলেন। বাউল শিল্পী বিনয় কৃষ্ণ মহন্ত বলেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর তিনি অনবরত গান বেঁধে বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করে তিনি প্রশাসনের নজরে আসেন। বীরভূমের সিউড়িতে একবার ১৯টি জেলার বাউল সঙ্গীত শিল্পীরা অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে সবাইকে পেছনে ফেলে দিয়ে ২১তম রাজ্য নব স্বাক্ষর বাউল সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় রাজ্যের সেরা বাউল শিল্পীর সন্মান লাভ করেন বলে বিনয় কৃষ্ণ মহন্ত জানান। তিনি বলেন অত্যন্ত দারিদ্রতার মধ্য দিয়েই তার জীবনের অনেকটা দিন গেছে। বর্তমান সরকার লোক শিল্পীদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। সরকার লোক শিল্পীদের প্রতিমাসে একহাজার করে টাকা এবং লোকশিল্পীর পরিচয় পত্র দেওয়ায় বাউল ও লোকশিল্পীদের এখন অনেকেই সন্মান দিচ্ছে। তবে প্ৰকৃত যারা শিল্পী তাদের লোক ভাতার পরিমান কিছুটা বৃদ্ধি করলে অনেকেই উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন তার নিয়মিত কোন রোজগার নেই। কষ্টের মধ্য দিয়েই গানের উপরেই সংসার চলে। তবে কষ্টের মধ্যেও অনেক আনন্দ পাই মানুষের ভালোবাসার মাধ্যমে। তিনি বলেন বাউল বাউল সবাই বলি কিন্তু প্ৰকৃত বাউল ক,জনা। কত গেরুয়া বসন মলিন হল মনতো বাউল হল না। এই মুহূর্তে প্ৰকৃত বাউলের বড়ই অভাব।