জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২০, সোমবার : মার ইচ্ছা পূর্ণ করতে মোটা টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে গত দু বছরেও বেশি সময় ধরে মা কে স্কুটারে চাপিয়ে দেশ জুড়ে থাকা তীর্থস্থানগুলি দর্শন করাচ্ছেন মাইসোরের বাসিন্দা দক্ষিনামূর্তি কৃষ্ণ কুমার। আজ থেকে বছর কুড়ি আগে বাবার দেওয়া স্কুটার করে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মা চুড়ারত্না দেবীকে নিয়ে যাত্রা মাইসোরের বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করেন। বিভিন্ন রাজ্যে পেরিয়ে গত ২৪ এ ফেব্রুয়ারি মাকে নিয়ে মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি বাবুয়া প্রসাদের বাড়িতে রাতে এসে পৌছান। সেখানে রাত কাটাবার পর মঙ্গলবার ডুয়ার্সের বিভিন্ন মন্দির এলাকায় মাকে নিয়ে ঘুরে বেরাবেন তিনি। কর্নাটকের মহীশুর এর এই বাসিন্দা গত ২৫ মাস ধরে স্কুটারের পেছনে মা কে বসিয়ে তিনি ৫২০৩২ কিলোমিটার পথ পারি দিয়েছেন। ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে তার বাবা দক্ষিনামূর্তি মারা যান। তার বাবা সরকারী চাকুরে ছিলেন। কৃষ্ণ কুমার একটি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থায় টিম লিডারের চাকরি করতেন। বর্তমানে তার বয়স ৪১ বছর। মা চুড়ারত্না দেবীর বয়স ৭০ বছর। কৃষ্ণ কুমার, যিনি তার মার ইচ্ছা পূর্ণ করতে মোটা টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে স্কুটারে চেপে ভারত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মা চুড়ারত্না দেবী জানান তার জীবনের অধিকাংশ সময় রান্না করে কেটে গিয়েছিল। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাড়ির কাজ করে করতেন তিনি। সংসারের বাইরে দেখার সময় একদমই ছিলনা তার। তাই দর্শনীয় স্থানগুলি তো দূরের কথা বাড়ির আশেপাশে মন্দির গুলিও দেখে ওঠা হয় নি বছর ৭০ এর এই বৃদ্ধার। এরপর তার ছেলে তাকে নিয়ে সারা ভারত দর্শন করাচ্ছে। এতে তিনি খুব খুশি। তিনি বর্তমান প্রজন্মকে ম্যাসেজ দিতে চান বিয়ের পর আজকাল অধিকাংশরাই আলাদা হয়ে যায়। এটা ঠিক নয়। বয়ষ্করা চায় শেষ জীবনটা নিজের সন্তান দের কাছেই থাকতে। ছেলে কৃষ্ণ তার বাবা মারা যাবার পর মা কে জিজ্ঞাসা করি মা দেশের কোন তীর্থ স্থান গুলিতে তুমি যেতে চাও। মা বলেন বাবা তুই আমাকে আশেপাশের মন্দিরগুলি দেখা তবেই যথেষ্ট। নাম করা তীর্থ স্থানগুলি এই বয়সে আর নয় নাই দেখলাম। মায়ের কথা শুনে ছেলে কৃষ্ণকুমারের বিবেক দংশন হয়। তখন সে সিদ্ধান্ত নেয় মা কে স্কুটারে চাপিয়ে দেশ জুড়ে থাকা তীর্থ স্থানগুলিতে নিয়ে যাবে। কেন তিনি স্কুটারকেই বাছলেন? তিনি জানান যে তিনি বাবা-মা-র একমাত্র সন্তান। আর এটা তার বাবার দেওয়া গিফট। এটা সাথে থাকলে তাদের মনে হয় পুরো পরিবার একসাথে আছে।