উত্তর দিনাজপুর : ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২০, মঙ্গলবার : নতুন ট্রেন কী হবে, তা কোথা থেকে কোথায় যাবে, কোন পথে যাবে, ক’টায় ছাড়বে, কখন পৌঁছবে, এসব নিয়ে প্রতিদিন দিনভর চর্চায় মশগুল রায়গঞ্জ। দু’টি ট্রেন পাচ্ছে এই শহর। এনিয়েই সব জায়গায় আলোচনা চলছে। কিন্তু রাধিকাপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেনের টাইম টেবিল বা রুট নিয়ে স্পষ্ট কোনও ঘোষণা না থাকায় নানা চর্চা শহরে ছড়িয়েছে। কেউ বলছেন রাধিকাপুর-কলকাতা নতুন ট্রেন পাচ্ছে রায়গঞ্জ। আবার কেউ বলেন সিউড়ি-হাওড়া ট্রেনটিই রাধিকাপুর পর্যন্ত বাড়ানো হবে। ঠিক কোন ট্রেন চালু হচ্ছে, এনিয়ে এখনও পর্যন্ত বিজেপি পরিষ্কার কিছু বলতে পারেনি। তবে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত সিউড়ি-হাওড়া ট্রেনের যাত্রাপথ বাড়িয়ে রাধিকাপুর পর্যন্ত করা হচ্ছে। কলকাতা যাওয়ার ট্রেনটি পরে আসবে। এদিকে রায়গঞ্জ স্টেশন কর্তৃপক্ষ কিন্তু জানিয়েছে, নতুন ট্রেনের ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনও খবর তাদের কাছে আসেনি। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী অবশ্য বলেন, আমাদের কাছে যা খবর রয়েছে, তাতে আমরা ৯০ শতাংশ নিশ্চিত যে, রাধিকাপুর-কলকাতা কুলিক এক্সপ্রেস ট্রেনটি পাচ্ছি। হাওড়ার ট্রেনটি নয়। এটি ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে রাধিকাপুর থেকে ছাড়বে। রাত ৯টা নাগাদ কলকাতা পৌঁছবে। শহরের বাসিন্দারা বলেন, রেলের থেকে আগে যে টুকু ইঙ্গিত ছিল তা হল সিউড়ি-হাওড়া ট্রেনটিকেই রাধিকাপুর পর্যন্ত টানার কথা তারা ভাবছে। শুক্রবার বিজেপির জেলা সভাপতির সাংবাদিক সম্মেলনের পাশাপাশি রায়গঞ্জের সংসদ সদস্য তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, রাধিকাপুর-হাওড়া ট্রেন চালু হচ্ছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জ স্টেশনে ট্রেনটির যাত্রা শুরু করবে বলে রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ আঙ্গারিয়া জানিয়েছেন। ট্রেনটি ভোরে রাধিকাপুর থেকে ছেড়ে রায়গঞ্জ বারসই হয়ে হাওড়া পৌঁছবে রাতে। শহরের একাংশ অবশ্য কলকাতা যাওয়ার দিনের ট্রেনের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা বলেন, রাতে কলকাতা পৌঁছলে সেদিন বাজারহাট বা সরকারি কাজ হবে না। পরের দিন করতে হবে। এতে লাভ হবে না। শহরের বেশিরভাগ মানুষজন অবশ্য বলেন, দিনের ট্রেনই দরকার। রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের উপর অত্যন্ত চাপ। সহজে টিকিট মেলে না। রোগীকে নিয়ে বা অন্য প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা যেতে হলে দিনে পৃথক ট্রেন দরকার। রায়গঞ্জ থেকে বারসই হয়ে কলকাতা যেতে হলে দূরত্ব বা সময় কমানোর কোনও উপায় নেই। তাছাড়া রাধিকাপুর থেকে কলকাতা বা হাওড়া এই দীর্ঘ যাত্রাপথের বহু জায়গায় জেলাবাসীকে নানা প্রয়োজনে যাতায়াত করতে হয়। সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, বর্ধমান এসব এলাকায় যেতে হলে রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে যাতায়াত করা যায় না। কারণ, ট্রেনটি ওইসব এলাকায় মাঝরাতে পৌঁছয়। দিনের বেলা ওইসব এলাকায় ট্রেনে যেতে পারলে সেখান থেকে বিভিন্ন লাইনে যাতায়াত করা যাবে। তাছাড়া রাতে হাওড়া পৌঁছলে সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে, সেখান থেকে দক্ষিণ ভারত বা দেশের অন্য প্রান্তের ট্রেন ধরার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। ভোরে কলকাতা পৌঁছে রাতে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরার ঝক্কি অনেক। ব্যবসায়ীরা বলেন, হাওড়া হাট, মেটিয়াবুরুজের হাট এসব ভোররাত থেকেই লেগে যায়। রাতে হাওড়া পৌঁছলে ওই বাজার ধরার সুবিধা মিলবে। পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শংকর কুন্ডু বলেন, মনে হচ্ছে সিউড়ি-হাওড়া ট্রেনটিকেই রাধিকাপুর পর্যন্ত বাড়ানো হবে। দিনের ট্রেনই আমাদের প্রয়োজন। তবে এতকাল ধরে নানা কথা বিভিন্ন দলের কাছে শুনেছি, বাস্তবায়িত হতে দেখিনি।