মালদা : ২১শে মার্চ ২০২০, শনিবার : করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আত্মঘাতী বামনগোলা থানার জগদ্দলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলমনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর শরীর থেকে রোগ জীবানু পরিবারের অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে সন্দেহে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু করোনা নিয়ে গুজবের শিকার হতে পারেন তিনি বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামল হেমব্রম। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বামনগোলা থানা এলাকায়। জানা গেছে, মৃত মহিলার নাম ফুলমনি বাসকে (৪০)। বামনগোলা থানার জগদ্দলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বানপাহাড় গ্রামে বাড়ি তাঁর। স্বামী হোপনা হেমব্রম প্রয়াত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর। একাদশ শ্রেণিতে পড়া একমাত্র পুত্র সন্তান জামিন হেমব্রমকে নিয়ে তাঁর সংসার। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ফুলমনি অসুস্থ। জ্বর, মাথাব্যথা নিয়ে বছর দুয়ের ধরে আক্রান্ত। মাস খানেক আগে সুস্থও হয়ে ওঠেন। আবার দিন পনেরো আগে অসু্স্থ হয়ে পড়েন।
এদিকে ছেলের একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে, তাই তিনি চলে যান তাঁর দিদি তালাময়ী হাঁসদার বাড়ি। গোয়ালজরা গ্রামে দিদির বাড়ি। সেখানেই ছিলেন তিনি। গত বুধবার বিকেল থেকে নিখোঁজ হন ফুলমনি । বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে গোয়ালপাড়া গ্রামে। নিজের বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে একটি আমগাছের ডালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখেন স্থানীয়রা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে মোদিপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। ভাগ্নে সঞ্জীব হেমব্রম বলেন, বুধবার বিকেলের দিকে ওষুধ আনতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। পরের দিন তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। কিছুতেই জ্বর সারছিল না। সঞ্জীব আরও জানান, চারিদিকে করোনা নিয়ে আতঙ্ক। জ্বর থেকে নাকি করোনা হচ্ছে। মাসিও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আর তিনি সুস্থ হবেন বলে অবসাদে ভুগছিলেন দু-দিন ধরে। পাশাপাশি এই রোগ বাড়ির অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আতঙ্কিত ছিলেন উনি। হয়ত সে-কারণেই আত্মহত্যার পথে নেন উনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামল হেমরম বলেন,‘মৃত ফুলমনি বাসকে দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। এদিন আমরা তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু করোনা নিয়ে আতঙ্কে মৃত্যু, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মানুষকে সতর্ক করছি যাতে জ্বর হলে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন। জ্বর নিয়ে যাতে গুজবে কেউ কান না দেন।