আলিপুরদুয়ার : ২৬শে মার্চ ২০২০, বৃহস্পতিবার : যারা সারাদিন খবর করে বেড়ায় ,তারাও কোনো কোনো সময় খবরের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যখন সারা দেশে চলছে লক ডাউন। স্তব্ধ হয়ে রয়েছে সারা দেশ। থেমে রয়েছে গোটা ব্যবস্থা। কিন্তু মানুষের সমস্যা থেমে নেই।
এমনই এক সমস্যা জর্জরিত মানুষ অসম গৌহাটির ভাস্কর নগরের বাসিন্দা বছর ২২ এর রং মিস্ত্রি কার্তিক রায়। গত দু মাস থেকে উনি রংয়ের কাজ করতেন জলপাইগুড়ির এক ঠিকাদারের অধীনে । গত কুড়ি মার্চ কাজে যাবার পথে বাস থেকে নামার সময় অসাবধানতা বসত পরে যায় সে। পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় বাসের চাকা। গুরুতর আহত হয়ে জলপাইগুড়ি সদর হসপিটালে ভর্তি হয় সে । কিন্তু অপারেশন না করলে তার পা টিকে বাঁচানো যাবে না এবং তার খরচ অনেক জেনে মালিক কোনো রকমে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে দিয়ে চলে যায়। এমনকি তার মোবাইলের সিম কার্ডটিও খুলে নিয়ে যায় । যাতে সে এই ঘাটিনাটি বাড়িতে জানাতে না পারে । এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় সারা দেশে লক ডাউন। অথৈ জলে পরে কার্তিক। হসপিটালের দেওয়া একজোড়া ক্রাচের ভরসায় এই অবস্থায় সে রওনা দেয় আসামে বাড়ির উদ্দেশে। কখনো মালবাহী লরিতে কখনো স্ক্র্যাচে ভার দিয়ে হেটে দিন তিনেক পরে এসে পৌঁছায় বারোবিশাতে। সেখান থেকে বারোবিশার পুলিশ তার কথা শুনে গুয়াহাটিগামী একটি পণ্যবাহী লরিতে তাকে তুলে দেয় । কিন্তু কিছুদূর গিয়ে সেই লরি ড্রাইভার তাকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। গত বুধবার বিকেল থেকে সে বসে থাকে রাস্তার পাশে। রাতের বেলায় নজরে পরে বারোবিশার সাংবাদিক মিঠুন সরকারের। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মিঠুন বাবু । রাতে কার্তিকের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করে মিঠুন। পরদিন বৃহস্পতিবার আসামের কিছু সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকালে তাকে মোটর সাইকেলে চাপিয়ে আসামের গোসাইগাওঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। তার অবস্থা দেখে সেখান থেকে তাকে কোকরাঝাড় জেলা হসপিটালে রেফার করে দেয় হাসপাততালে। সর্বশেষ পর্যন্ত খবর, সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।