জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২রা জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার : ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে লাগাতার বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে ডুয়ার্সের নদীগুলির উৎপত্তিস্থল পাহাড়ে। একনাগারে বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ের জল দ্রুত গতিতে স্থানীয় নদীগুলিতে পড়ার ফল নদীর জল ফুলে ফেপে যায়। আর নদীর এই ভাবগতিক দেখে এলাকার লোকজন বিশেষ করে নদীর পাড়ের লোক আতঙ্কে থাকে। ডুয়ার্সের জলঢাকা, ডায়না, গাঠিয়া,কুচি ডায়না, নেওড়া,মাল নদী ও চেল আর ঘীস। এতে অসুবিধায় পড়েন নদীর বাঁধের পাড়ে বসবাসকারী লোকেরা। নিদ্রাহীন ভাবে রাত কাটে। মাল শহরের পুর্ব পাশে মাল নদী গত দুইদিন ধরে ভয়ংকর অবস্থায়। নদীর জল বারবার দুই দিকের বাঁধের পাশে আঘাত হানছিল। গতকাল নদীর জল এত বেড়ে যায় যে পাথর ভর্তি করতে আসা একটি ট্রাক ডুবে যায়। প্রচন্ড বৃষ্টি হলে ঘীস, নদীর জল রমতিঝোরায় মিশে যাওয়ায় জল রেলওয়ে আন্ডারপাস দিয়ে বেরিয়ে ৩১নং জাতীয় সড়ক প্লাবিত করে নষ্ট করে কৃষি জমি। নাগ্রাকাটার গাঠিয়া নদীর জল বাড়লে নদী সংলগ্ন এলাকা নাগ্রাকাটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এছাড়া তিস্তা নদীর জল বাড়লে বিরাট এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরতে পারে। এর ফলে মাল ব্লকের চাপাডাঙা ও ময়নাগুড়ি ব্লকের দোহমনী অবস্থা বিপদজনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা। বর্ষাকালে তিস্তা নদীর ভয়ে আতংকিত থাকে ওই এলাকা। ফি বছর চাপাডাঙায় বন্যা একটা চিরস্থায়ী ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিল। সেচ দপ্তর থেকে বাঁধ দেওয়ায় সেই আশংকা একদম চলে যায় নি। ইতিমধ্যে সেই বাধের বেশ কিছু জায়গায় রেন কাট হওয়ায় উদ্ববেগ তৈরী হয়েছে। সেচ দপ্তরের মাল মহকুমা আধিকারিক কেশব রায় জানিয়েছেন ধসে যাওয়া অংশ মেরামতি করা হচ্ছে। দুশ্চিন্তার কারন নেই। পরিস্থিতির উপর সদা নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টি কিছুটা কমায় তিস্তা নদীতে জলের বেগ কম। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটা নাগাদ জল গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে প্রতি ঘন্টায় ১৫০০ কিউমেক জল প্রবাহিত হয়েছে। ৪৫ টির মধ্যে ১৪ টি গেট খোলা আছে। তবে পাহাড়ে বা সিকিমে বৃষ্টিপাত বেশী হলে এই জলপ্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মুষলধারে বৃষ্টি এসে নাগরাকাটা ব্লকের আংরাভাষা গ্রাম পঞ্চায়েতের খেরকাটা জঙ্গলের ধারে এককিমি ডায়না নদীর বাধ ভেঙ্গে গিয়েছে। এমনকি আরো অনেক জায়গায় বাধ ভাঙ্গা শুরু হয়েছে ডায়না নদীর জল বেড়ে গিয়ে। বাধ ভেঙ্গে গ্রামে জল ঢুকে পড়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় পাচ হাজার বিঘা জমির ধান। যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে প্রায় তিনহাজার পরিবার ভেসে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমানে বহুবাড়ি ঘর জল মগ্ন হয়ে পড়েছে। সকলের অভিযোগ এখনই যদি বাধ মেরামতি না করা হয় তাহলে গোটা খেরকাটা ভেসে যেতে পারে।