উত্তরবঙ্গ : ২রা জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার : বৃহস্পতিবার জলমগ্ন হয়েছে আলিপুরদুয়ার শহর, কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলবন্দি প্রচুর মানুষ। আবহাওয়া দফতর ৪ জুলাই পর্যন্ত ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। পাহাড়ে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি হয়েছে, নামতে পারে ধস। আলিপুরদুয়ার শহর জলবন্দি হয়েছে। হাসিমারা, ফালাকাটার বিস্তীর্ণ এলাকাও ভেসেছে। আলিপুরদুয়ার জেলা সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জানান, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। জেলার সব ব্লকেই বৃষ্টির জল দাড়িয়ে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল দাড়িয়েছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কোচবিহারের মাথাভাঙা-১ মহকুমা এলাকায়। বৃষ্টিপাতের পরিমান ৩৭৩ মিলিমিটার। সেখানে কয়েকশো পরিবার জলবন্দি হয়েছে। এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটেছে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জের কিছু এলাকায় নদীর জল ঢুকেছে। আলিপুরদুয়ার শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩০৫ মিলিমিটার। কুমারগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২০৩ মিলিমিটার। একটানা বৃষ্টির কারনে জলবন্দি হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। জেলার কিছু এলাকায় জল দাড়িয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।
পাহাড়ে ভারী বর্ষণের জেরে ডুয়ার্সের জলঢাকা, ডায়না, গাঠিয়া, কুচি ডায়না, নেওড়া, মাল, চেল ও ঘিস ফুসতে শুরু করেছে। বিপাকে নদীর বাঁধ সংলগ্ন কয়েক হাজার পরিবার। মাল নদীও ভয়ংকর অবস্থায়। নাগরাকাটা ব্লকের আংরাভাষা গ্রাম পঞ্চায়েতের খয়েররকাটা জঙ্গলের ধারে এক কিলোমিটার ডায়না নদীর বাধ ভেঙ্গেছে। গ্রামে জল ঢুকেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় পাচ হাজার বিঘা জমির ধান। সিকিম পাহাড়ে ভারী বর্ষণের ফলে সেবকের কাছে তিস্তায় জলস্তর বেড়েছে। বাগডোগরার কাছে রাস্তায় একটি সেতুর মাটি জলের তোড়ে ধুয়ে যাওয়ায় বিপজ্জনকভাবে ঝুলে রয়েছে। শিলিগুড়ি পুরো এলাকায় কয়েকটি ওয়ার্ডে জল দাড়িয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌসুমী অক্ষরেখার পূর্বভাগ সিকিম ও উত্তরবঙ্গের উপরে রয়েছে। এর ফলে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে। ৪ জুলাই উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত চলবে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পংয়েও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সিকিমে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি হয়েছে।
এক নজরে বৃষ্টিপাতঃ- পাড়াডুবি (কোচবিহার) ৩৭৩ মিলিমিটার ; আলিপুরদুয়ার ৩০৫ মিলিমিটার ; শীতলখুচি ২০৬ মিলিমিটার ; কুমারগ্রাম ২০৩ মিলিমিটার ; ফালাকাটা ১৯৫ মিলিমিটার ; চেপানি ১৭৩ মিলিমিটার ; মাথাভাঙা ১৬৯ মিলিমিটার ; মেখলিগঞ্জ ১৫৫ মিলিমিটার ; ডায়না ১২৩ মিলিমিটার ; দিনহাটা ১১৩ মিলিমিটার ; হলদিবাড়ি ১০৮ মিলিমিটার ;