জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ৫ই জুলাই ২০২০ রবিবার : শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার হাতে মাত্র কয়েকদিন। এর মাঝেই শ্রাবণ মাসের শ্রাবণী মেলা হবে কি না তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। করোনার আবহে জল্পেশের শ্রাবণী মেলা ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। করোনায় সুস্থতার হার বাড়লেও রোখা যাচ্ছেনা সংক্রমণ। যার জেরে আসন্ন শ্রাবণী মেলাকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। এবছর আদৌ মেলা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশায় জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড। কিছুদিনের মধ্যে প্রশাসনিক বৈঠকে শ্রাবণী মেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে বলে স্পষ্ট করেছেন তারা। তবে এবছর মেলা হবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেনি তারা। ফলে এবারের শ্রাবণী মেলা কে ঘিরে আশঙ্কায় রয়েছেন সকলেই। উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রাচীন শিব তীর্থ জল্পেশ মন্দিরে বছরের বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকটি মেলা বসে। তার মধ্যে অন্যতম শ্রাবণী মেলা। শ্রাবণ মাসের পূর্ণ তিথিতে মাসের শুরুতেই মেলার সূচনা হয়। জল্পেশ মেলা কে কেন্দ্র করে স্থানীয় বহিরাগত কয়েক লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যেক বছর মেলায় ভিড় জমান। এই সময় জেলার পার্শ্ববর্তী রাজ্য গুলির পাশাপাশি ভিনদেশ থেকেও পুণ্যার্থীরা শিবলিঙ্গে জল ঢালতে আসেন। বিশেষ করে নেপাল ভুটান ও বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজন ছুটে আসেন এখানে। রাজ্যের পাশাপাশি সমগ্র উত্তরবঙ্গ ব্যাপী মানুষের কাছে জল্পেশ শ্রাবণী মেলার প্রাধান্য চোখে পড়ে। আষাঢ়ের শেষ থেকে জেলা প্রশাসন ও মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। স্থানীয় ও বহিরাগত বিপুল দর্শনার্থীদের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেলার সুষ্ঠু পরিবেশ ও পরিচালনার ব্যাপারে চূড়ান্ত তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। তবে এবছরের ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। করোনার কোপে পুরোপুরি বিপর্যস্ত বিশ্ব। হাল ফেরাতে কাল ঘাম ছুটছে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলিতে। সেই দৌড়ে ভারত বর্ষ রয়েছে। করোনা মোকাবিলায় লকডাউন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে দেশব্যাপী আনলক প্রক্রিয়া। তবে মৃত্যুর হার সাম্প্রতিক কিছুটা কমলেও কার্যত বেলাগাম করোনা সংক্রমণ। সারাদেশ ব্যাপী বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধির ওপর। তাই সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন্ন শ্রাবণী মেলা সম্ভব হবে কিনা সে ব্যাপারে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এ ব্যাপারে আশার বাণী শোনাতে ব্যর্থ জল্পেশ মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ড।
শ্রাবণী মেলায় বাড়তি ঝুঁকি নেওয়া আদৌ সম্ভব হবে কিনা সে ব্যাপারে ধন্দে রয়েছেন তারা। ইতিহাসে এই প্রথম বার আসন্ন শ্রাবণী মেলা কে ঘিরে প্রশাসক থেকে শুরু করে অগণিত ভক্তদের মনে প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিয়েছে। জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্র নাথ দেব বলেন, এবছর শ্রাবণী মেলা করা হবে কি না তা নিয়ে আমাদের আবারও বৈঠক রয়েছে। তবে মন্দির খোলা রয়েছে । সেভাবে পুণ্যার্থীরা আসছেন না। মন্দিরে প্রবেশে মুখে মাস্ক এবং স্যানিটাইজ করে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে এবছর মেলা না হলে বড়ো ধরনের ধাক্কার মুখে পড়তে হবে। জল্পেশ মন্দিরে যে সমস্ত কর্মচারী রয়েছেন তাদের বেতন এবং মন্দির সংস্কার করা সম্ভব হবে না। তবে যদি মেলা হয় তবে নিরাপত্তার বিষয়টি ভালো ভাবে দেখতে হবে বলে জানান।