কোচবিহার : ১৪ই জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার : উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ এর বিধায়ক দেবেন্দ্র নাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবাদে ১২ ঘন্টা উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাকদেয় বিজেপি এই ঘটনায় সকাল থেকেই দফায় দফায় মিছিল পাল্টা মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের রাজপথ। গাড়ি ভাঙচুর, মারধর, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সোমবারের বনধের সাক্ষী থাকল কোচবিহার জেলা। সোমবার ভোর সাড়ে ৫ টায় কোচবিহার শহরের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার টার্মিনাসের সামনে বনধের সমর্থনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতি রাভা রায় সহ অন্যান্য বন্ধ সমর্থকরা। সকাল ৮ টা ১৫ থেকে কোচবিহার ১ ব্লকের মরাপোড়া, ঘুঘুমারি,ধলুয়াবাড়ি ও কদমতলা এলাকায় এক এক করে চারটি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস ভাংচুরের অভিযোগ ওঠে বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হন কয়েকজন বাসযাত্রী। সকাল ৯ টা নাগাদ ঘুঘুমারি লাকায় বিজেপি বনধ সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জ করে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ। সকাল ১০ টা নাগাদ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বনধের বিরোধিতায় বসে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপর।
কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের গুড়িয়াহাটি ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের ঘটনা। অভিযোগ একদল দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে এসে সেখান থেকে ধস্তাধস্তি করে তাদের চেয়ার থেকে তুলে দিয়ে সেই চেয়ার টেবিল ভেঙ্গে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং এক তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক কে মারধর করে বলে অভিযোগ বিজেপি বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সকাল ১০ টা ৩০ নাগাদ কোচবিহার পৌরসভার অফিসের সামনে থেকে বনধের বিরোধিতায় এক মিছিল বের করে তৃণমূল কংগ্রেসের শহর ব্লক কমিটি। সাগরদিঘির চারপাশ পরিক্রমা করে আবার পৌরসভার সামনে এসে শেষ হয়। এই মিছিলে পা মেলান তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিং সহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
এ দিকে সকাল ১০ টা ৩০ নাগাদ মাথাভাঙ্গা থেকে কাজে যোগ দিতে অফিসে আসার সময় ঘুঘুমারি এলাকায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপারসনের গাড়ির উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রতিবাদে মিছিলে তৃণমূল কংগ্রেসের।
বেলা যত বাড়তে থাকে জেলাতে ততই বনধের উত্তাপ বাড়তে থাকে তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বলরামপুরে বনধের সমর্থনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আসা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা ও বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের একটি মিছিল তাদের ওপর হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সহ বেশ কয়েকটি মোটরবাইক। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন অহত হয়ে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের শালবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাগুরহাট বাজারে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক বন্ধ বিরোধীতায় মিছিল করে।
সেই সময় অতর্কিতে তীর ধনুক লাঠিসোটা নিয়ে একদল দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় বেশকিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বক্সিরহাট থানার পুলিশ। যদিও সমস্ত ঘটনা ভিক্তি হীন বলে দাবি করেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকার জানান, সোমবারের বনধ কে কেন্দ্র করে প্রায় ১৫০ জন বনধ সমর্থকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।