22.5 C
New York
Thursday, June 19, 2025

Buy now

spot_img

দিনমজুরা চাতক পাখির মতো কাজের আশায়।

উত্তর দিনাজপুর : কালিয়াগঞ্জ : ১লা অক্টোবর ২০২০ : বৃহস্পতিবার : শারদ উৎসবের হাতে গোনা মাত্র কদিন বাকি। একদিকে করোনা অন্যদিকে লাগাতার বৃষ্টির কারণে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে ধানি জমি ও সব্জি খেত জলের নিচে। অন্যদিকে একশো দিনের কাজের জব কার্ড থেকেও কাদের, মফিজুর আনিসুরেরা গ্রামে কাজ না পেয়ে কালিয়াগঞ্জ শহরের মহেন্দ্রগঞ্জ নাট মন্দির চত্বরে চাতক পাখির মত অপেক্ষা করছে একটা দিনমজুরের কাজের জন্য। কিন্তু সেখানেও কাজের কোন খোঁজ মিলছেনা। সাত সকালে কালিয়াগঞ্জ শহরের মহেন্দ্রগঞ্জ নাট মন্দিরে সাইকেলে কোদাল, ডালি, দা বেঁধে কেউ দশ মাইল কেউবা আট মাইল দূর থেকে এসে পেটের তাগিদে একটা কাজের খোঁজের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

হেমতাবাদের কাকরসিং গ্রামের আনিসুর রহমান এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, বাবু সবার জন্য দুর্গা পূজা থাকলেও হামাদের পেট পূজার চিন্তা দুর্গা পূজার উৎসব থেকে অনেক বড়। আনিসুর রহমান বলেন, আমরা উৎসব চাইনা আমরা বাঁচার জন্য কাজ চাই। আট মাইল সাইকেল চালিয়ে আসা মিত্রবাটির সংসারু বর্মন জানায়, দুর্গাপূজা বাবুদের পূজা। ঐলা হামাদের জন্য নয়। বাবুরা কাজ না করেও সাত মাস ধরিয়া বসে বসে থাকলেও তাদের বেতন মেলে। আমাদের একদিন কাজ না জোগাড় হলে অনাহারে থাকতে হয়। গ্রামে ধানের জমি সব্জির খেত জলে ডুবে থাকায় কোন কাজ নাই। কি ভাবে পরিবারের মুখে দুইটা খাবার জোগাড় করে নিয়ে যাবো সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে আছে। পশ্চিম দুর্গাপুরের কিনু মহম্মদ বলেন চারদিকে জল আর জল। কোথায় কাজ পাবো তার খোঁজে ভোর থেকে বসে থেকেও কোন কাজ এখনো মেলেনি। সরকার পূজা করার জন্য ৫০ হাজার করে কত ক্লাবকে দিলেও আমরা কোন কাজ না পেয়ে মরে গেলেও আমাদের দিকে কোন নজর নেই সরকারের। সরকার এখন আমাদের দেখতে পায়না। ভোট আসিলে তখন আমাদের দেখবার পায়। গ্রামের দিন মজুরেরা যতদিন কাজ না পাচ্ছে তত দিন আমাদের জন্যতো টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সে দিকে কোন নেতাদের নজর নাই। নেতা বাবুদের এখন একটাই চিন্তা আমাদের কাছ থেকে কি করে ভোট নিয়ে আবার  ক্ষমতা দখল করবে। আমরা কাজ না পেয়ে পরিবার নিয়ে অনাহারে থাকলেও তাদের কোন যায় আসেনা। শাসনের আমানুর আলী বলেন যে হারে সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে তাতে আমরা চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছি। আমরা মজুরী বাবদ যদি বাবুদের কাছে ৩০০ টাকা দাবি করি সেখানে বাবুরা দিতে চায় না। ১৫০থেকে ২০০ টাকা হলে তারা আমাদের কাজ দিতে রাজি হয়। বাবুদের নাকি সংসার চালানো খুব মুশকিল। বাবুরা এত বেতন পেয়েও যদি এসব কথা বলে তখন বলার কিছু থাকেনা। তিনি বলেন আমরাই শুধু দুস্থ নই আমাদের চাকুরী করা বাবুদের কথা শুনে মনে হয় আমাদের চেয়েও তাদের অবস্থা আরও খারাপ। ভান্ডারের মজিদ আলী বলেন, এই উৎসবের সময় সরকার সবাইকে আর্থিক সহযোগিতা করছে অথচ দিন মজুরদের বেলায় সরকারের অর্থ থাকে না। তিনি বলেন, আমরা বাঁচতে চাই পরিবার পরিজনদের নিয়ে। সরকার এই সময়ে আমাদের সাহায্য করলে আমরা দিন মজুররা উপকৃত হতাম।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!