উত্তরবঙ্গ : ৭ই অক্টোবর ২০২০ : বুধবার : নিজস্ব সংবাদ দাতা- (জয়ন্ত বোস) : বঙ্গ রাজনীতিতে এখন রাজ করছে কর্পোরেট সংস্থা এমনি শোরগোল চারিদিকের রাজনৈতিক ময়দানে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক ক্রিয়াকলাপ এখন কর্পোরেটের হাতে। সব কথার শেষ কথা পি কে। বাংলার মানুষ এযাবৎকাল পি কে মানে ফুটবলার পি কে ব্যানার্জী ( প্রদীপ কুমার ব্যানার্জী) কেই চিনতো, যার পায়ের জাদুতে ভারতীয় ফুটবল টীম একটা সময় আলোড়িত হয়েছিল। আর আজকের রাজনৈতিক ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্পোরেট সংস্থা পি কের সাজেশন বার্তার জাদুতে সংগঠনসহ দলের সুপ্রিমো হাঁটছেন কিন্তু হোঁচট খেতে হচ্ছে সর্বত্র। আর এই হোঁচট এর মধ্যেই বিদ্রোহী মিহির অর্থাৎ বিধায়ক মিহির গোস্বামী। কোচবিহার জেলার তথা বাংলার রাজনৈতিক মঞ্চে এক অন্যতম তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
২০২১-এর আগে তৃণমূল শিবিরে বিরাট ধাক্কা দিয়ে সাংগঠনিক সমস্ত দায়দায়িত্ব ছাড়লেন তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। কোচবিহার জেলা কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেল। যার জেরে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিলেন। তৃণমূলের হেভিওয়েট বিধায়ক মিহির গোস্বামীর এই বিদ্রোহে তৃণমূলের সংসারে ফের অশান্তির কালো মেঘ ঘনিয়ে এল। প্রশ্ন উঠল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মেনে রদবদল করছেন, তখন শৃঙ্খলার অভাব কেন ঘটল দলে। একুশের আগে বিদ্রোহের আগুন ফের অনেক জল্পনার বাতাবরণ তৈরি করল। কোচবিহার তৃণমূলে কোন্দল লেগেই রয়েছে। তার মধ্যে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় চেষ্টা করছেন সঙ্ঘবদ্ধতা আনতে। কয়েকদিন আগে কলকাতায় এক বৈঠকও হয়েছিল। তারপরও কোন্দল চূড়ান্ত আকার নিল। রাজনৈতিক মহলে মনে করছে, তৃণমূল কংগ্রেসের ওই বিধায়ক দলবদলের মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কি তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে পাড়ি জমাতে পারেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে মিহির গোস্বামী জানান, ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের শেষ বেলায় এসে অনেক অপমান সহ্য করতে হচ্ছে, আর নয়। এবার দলের সমস্ত সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। তিনি এদিন বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও দলবিরোধী কাজের অভিযোগ করেন।
মিহির গোস্বামীর মতো হেভিওয়েট বিধায়কের এভাবে সাংগঠনিক সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেওয়ার পর মুকুল রায়ের হাত ধরে যেতেই পারেন বিজেপিতে। কেন না মুকুল সক্রিয় হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বিধায়ক মহলে ফের ভাঙনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একুশের নির্বাচনের আগে ফের পরীক্ষার সামনে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে দেখার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদক্ষেপ নেন কি না। প্রশান্ত কিশোর বৈঠকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। তারপরও মিহির গোস্বামী দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ভাঙা সংসার জোড়া লাগাতে পারেন। ফের কোচবিহারে সংগঠিত তৃণমূলকে দেখা যেতে পারে।