জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২রা নভেম্বর ২০২০ : সোমবার : ছোট্ট মেয়েটির স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। সেই স্বপ্ন পূরনে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে নিজের শারীরিক অসুস্থতা। নিজেই অসুস্থ হয়ে আজ শয্যাশায়ী। প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১০০০ খরচ হচ্ছে। সেই সংস্থান নেই দিন মজুর বাবার। এমতাবস্থায় সেই অসুস্থ কিশোরীর পাশে এসে দাড়ালেন বাইক এম্বুলেন্স দাদা ভারত সরকারের পদ্মশ্রী সন্মানে ভূষিত করিমুল হক। মাল ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাস করেন দিন মজুর নরেন রায়। তার কিশোরী মেয়ে মুন্নি রায়ের স্বপ ছিল ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। সেই স্বপ্ন পূরনে বাধা হয়ে দাড়াল কিশোরীর শারীরিক অসুস্থতা। গত কিছুদিন আগে হটাৎ বাঁ পায়ে এক মাংস পিন্ড তৈরি হয়। দিনে দিনে সেই মাংসপিন্ডের আকার বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে বাবা নরেন রায় মেয়েকে নিয়ে যান মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মেডিকেল কলেজের ডাক্তাররা পরিস্থিতি বুঝে পায়ের মাংস পেশির প্রায় দেড় ফুট অংশ কেটে বাদ দেয়। কিছুদিন সেখানে চিকিৎসার পরে মেয়েকে মেডিকেল কলেজ থেকে ছুটি দিয়ে দেয়। মেয়েকে বাড়ি ফিরে আসেন নরেন বাবু। বাড়ি ফিরেই মেয়েকে নিয়ে সমস্যায় পড়েন। প্রতিদিন ড্রেসিং করতে হচ্ছে। তার উপর প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্যের। এই খরচ যোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছিলেন নরেন বাবু।
এই খবর পেয়ে মেয়েটির পাশে এসে দাড়ান করিমুল বাবু। মেয়েটির প্রতিদিন ড্রেসিং, পরিচর্চা ও খাদ্যের ব্যবস্থা করা শুরু করেন। পদ্মশ্রী করিমুল বাবু নিজের মুখে জানান, এটা কোন নর্মাল ড্রেসিং নয়। প্রতিদিন ড্রেসিং করতে প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা প্রয়োজন। তার উপর পুষ্টিকর খাবার দরকার। আমার চোখে সমস্যা থাকায় প্রথমদিকে ড্রেসিংয়ের জন্য এক জনকে দিয়েছিলাম। এখন চোখের সমস্যা মিটে যাওয়ায় আমি নিজে প্রতিদিন ড্রেসিং করছি। মেয়েটি এখন অনেকটাই সুস্থ। এই কাজে মালের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওসি শুভাশিস চক্রবর্তী ৫০০০ টাকা সাহায্য করেছেন। কোলকাতার তন্ময় বাবু আর্থিক সাহায্য করেছে। এই সাহায্য নিয়েই মেয়েটির পরিচর্চা করে চলছি। তবে আরও সাহায্যের প্রয়োজন। যদি কেউ এগিয়ে আসেন তবে ভালো হয়। কিশোরীর বাবা জানান, মেয়ের ইচ্ছে ছিল ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। হটাৎ করে এই সমস্যা হলো। বাড়িতে রোজ ড্রেসিং করা ও অন্যান্য খরচ যোগাড় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। করিমুল বাবু এগিয়ে আসার জন্য আজ মেয়ে অনেকটা সুস্থ। করিমুল বাবুকে কৃতঞ্জতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। উনি এইভাবে প্রতিদিন মানুষক সাহায্য করে চলছেন। ওনার মতো মানুষ সহজে চোখে দেখা যায় না।