জলপাইগুড়ি : মালবাজার : কালিম্পং : ২রা ডিসেম্বর ২০২০ : বুধবার : ভোট আসে, ভোট যায় কিন্তু অনেক গ্রাম আছে, যে সব গ্রামে উন্নয়ন এর ছোয়া পৌছাতে পারে না। এই সব গ্রাম গুলোর মানুষ উৎসাহের সাথে ভোট দিলেও, আখেরে তাদের ভাগ্যের চাকা কোন দিনো ঘোরে না। এরকম একটি গ্রাম হল কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের সৌরোনী গ্রাম। এখানে নেই এর সংখ্যা বেশ লম্বা। এই গ্রামে প্রায় ৩৫০ লোকের বসবাস। এখান মানুষগুলো কৃষি কাজ করেই সংসার চালায়। ছোট্ট এই গ্রাম প্রকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপুর্ণ। কৃষীকাজও ভালোই হয়। তবে এলাকার প্রধান সমস্যা হল যাতায়াতের রাস্তা। রাস্তার হাল এতটাই খারাপ যে এই রাস্তা দিয়ে কোন গাড়ীই চলে না। সৌরনী গ্রাম একটি বন বস্তি এলাকায়। পুরো এলাকাটি নেওড়া ভ্যালী জঙ্গলের মধ্যে পরে। বন্য জন্তুদের উপদ্রব রয়েছে।
কিন্তু এই সবের মধ্যে রাস্তা হাল এতটাই খারাপ যে পায়ে হেটেও চলাচল মুশকিল। গরুবাথান থেকে প্রায় ১৮ কিলো মিটার দূরে এই গ্রাম। অথচ উন্নয়ন এর ছিটে ফোটা নেই এই গ্রামে। রাতবিরাতে এই গ্রামে কেও অসুস্থ্য হলে খাটিয়াতে করে গরুবাথান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়। কারন রাস্তা খারাপের জন্য গাড়ি আসে না এই গ্রামে। এলাকায় ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার জন্য নেই কোন স্কুল। ২০১৮ সালে এই এলাকায় ২৭ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি প্রাথমিক স্কুল তৈরি হলেও, সেই স্কুল এখনো চালু হয় নি। এছাড়া ৮ বছর আগে তৈরি হয়েছে একটি ICDS সেন্টার কিন্তু সেই সেন্টার চালু হয় নি।
সেই কারনে এলাকার ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে ১৮ কিলোমিটার পায়ে হেটেই গরুবাথান স্কুলে পড়াশুনা করতে আসে। নেই পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা। এই প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে কোন ভাবে দিন কাটাচ্ছে এলাকায় মানুষেরা। এলাকার গৃহবধূ সলোমি রাই বলেন, খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি আমরা। বন্য জীব জন্তুর মতো আমাদের দীন কাটছে। কোন সরকারীই আমাদের দেখে না। আদিম মানুষের মত আমরা রয়েছি এই গ্রামে। বার বার বিভিন্ন জায়গায় বলেও কোন লাভ হয় নি। ভোট দেই কিন্তু আখেরে কোন লাভ হয় না আমাদের। আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষৎ অন্ধকার। এলাকার কৃষক গনেশ রাই এবং যুবক অজিত রাই বলেন, এলাকায় নেই স্কুল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পানীয় জলের ব্যবস্থা। এর মধ্যেই কোন ভাবে বেচে আছি আমরা। রাস্তা খারাপের জন্য গ্রামে গাড়ি আসে না। গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য, পায়ে হেটেই গরুবাথান যেতে হয়। ছেলে মেয়েরা ঠিকঠাক পড়াশুনা করতে পারছে না। এলাকায় প্রাথমিক স্কুল এবং আই সি ডি এস সেন্টার তৈরি হলেও চালু হয় নি। আদোও চালু হবে কি না সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। কবে এলাকার (সৌরনী বস্তির) উন্নয়নের ছোয়া লাগে সেই দিকেই তাকিয়ে এলাকার মানুষ।