উত্তর দিনাজপুর : কালিয়াগঞ্জ : ২০শে ডিসেম্বর ২০২০ : রবিবার : জ্যোতিষশাস্ত্রে রাহুর দশায় নাকি অনেকের জীবন ছাড়খার হয়ে যায় একথা জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাসী সকলের কাছে শোনা যায় কিন্তু রাজনৈতিক দলে যে একজন রাজনৈতিক বিতর্কিত চরিত্রের মানুষ রাহুর বেশ ধারণ করেন তা এইপ্রথম সাংবাদিক বৈঠকে কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে বসে জানালেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তপন দেব সিংহ। তিনি বললেন, রাহু বিদায় নিয়েছে বলে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার শহর ও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে মঙ্গল হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস দলের এই রাহু হলেন কালিয়াগঞ্জের কার্তিক চন্দ্র পাল।
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তপন দেব সিংহ, কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কমল কুমার ঘোষ, উঃ দিনাজপুর জেলা পরিষদের কো মেন্টর অসীম ঘোষ, উঃ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি গৌতম পাল, কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রাক্তন উপপৌরপতি তথা বর্তমান পৌর প্রশাসক মন্ডলির সদস্য বসন্ত রায়, ঈশ্বর রজক, রাজীব সাহা সহ অন্যান্য শাখা সংগঠনের নেতৃত্বরা। বিধায়ক বক্তব্যে প্রকাশ তিনবছর আগে কংগ্রেস দলের কাউন্সিলর ছিলেন, সেই দল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের বদান্যতায় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি হন। তবে সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন অনেককেই বলতে শোনা যায় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার ২০ বছরের পৌরপতি ছিলেন কংগ্রেসের প্রয়াত অরুন দে সরকার। কার্তিক চন্দ্র পাল অরুন দে সরকারের পারিবারিক সুত্রে ভাস্তি জামাই এবং প্রয়াত অরুন দে সরকার জামাই হিসেবে কার্তিক চন্দ্র পাল কে রাজনীতির আঙ্গিনায় নিয়ে এসে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার উপপৌরপতির চেয়ারে আসীন করেছিলেন। আর এই জামাই উপপৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল বাদ বাকি ১০-১১ জন কংগ্রেসী কাউন্সিলরকে সাথে করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং তৃণমূল কংগ্রেস কার্তিক চন্দ্র পাল কে পৌরপতির আসনটি উপহার স্বরূপ দেয়। এতে করে নাকি ২০ বছরের কংগ্রেসের জেতা বোর্ডের পৌরপতির আসনটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় এক মানসিক শোকের ধাক্কায় ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পরবর্তীতে অরুন দে সরকার প্রয়াত হন।
তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন বললেন কার্তিক চন্দ্র পাল কে তৃণমূল কংগ্রেস পৌরপতির চেয়ার, কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির চেয়ার, কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের রুগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যান, কুনোর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান, কালিয়াগঞ্জ সুশীল চন্দ্র টাউন লাইব্রেরির সম্পাদক এবং মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কালিয়াগঞ্জ পৌর শহরকে উন্নয়নের চাদরে মুড়িয়ে দিতে প্রচুর টাকা সাহায্য করে পৌরপতি হিসাবে কার্তিক চন্দ্র পাল কে সামনে রেখে। তা হলে এত কিছু পাওয়ার পরেও কার্তিক চন্দ্র পাল যেমন তার পারিবারিক সুত্রে কাকা শ্বশুর তথা রাজনৈতিক আঙ্গিনায় অরুন দে সরকারকে ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন তেমনি অনেক রাজনৈতিক চেয়ারের সম্মান পেয়েও তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যোগদান করলেন বিজেপি দলে শুভেন্দু অধিকারীর হাতটি ধরে। তবে এখানে কার্তিক চন্দ্র পাল মিরজাফর নামে আখ্যায়িত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই কার্তিক চন্দ্র পাল কে উঃ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব দল থেকে বহিস্কার করেছেন এবং কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌর প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব, কর্মীরা সকলেই তৃপ্তির হাঁসি নিয়ে বললেন হাফ ছেড়ে নাকি তারা বাঁচলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দল থেকে রাহু নামাঙ্কিত কার্তিক চন্দ্র পালের দলবদলে বিজেপি দলে যোগদান করায়।