জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ২১শে ডিসেম্বর ২০২০ : সোমবার : বাইশ হাত মা সীতা চামুন্ডা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হলো শনিবার রাতে। রবিবার থেকে দেখা গেলো ভক্তের ঢল। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই মা কালীর পুজোতে। জানা যায়, ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমহনী ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের রাখালহাট কুমার পাড়া গ্রামে ভবেন্দ্র নাথ রায় ২০০১ সালে কালী মায়ের পূজায় ব্রতী হন। আর তখন থেকে ভবেন্দ্রনাথ রায়ের স্বর্গীয় পিতা নন্দ রাম রায়ের নামানুসারে এই ধামের নাম রাখেন নন্দ ধাম। সেখানেই ধীরে ধীরে তিনি সেখানেই গড়ে তোলেন মা কালির ৯ ধরণের মূর্তি। তিনি সেখানে ৭ হাত কালি, ১১ হাত কালি, ১৪ হাত কালি মায়ের মূর্তির স্থান দিলেও তিনি সেখানেই গড়ে তুলেছেন বাইশ হাত সীতা চন্ডীর মূর্তি। এই মূর্তি গড়ার কাজ ২০০৬ সাল থেকে শুরু হলেও মূর্তি টি কেউ সম্পন্ন করতে পারেন নি। ভবেন্দ্রনাথ বাবু ওই অবস্থাতেই পুজো করে এসেছিলেন। অবশেষে ধূপগুড়ির বিবেকানন্দ পাড়া ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দয়াল পাল এসে এই মূর্তির কাজ সম্পন্ন করেন। এমনকি পূর্ণাঙ্গ মূর্তি নিয়ে এবছরই প্রথম পুজো হচ্ছে বলে জানান, পুজোর সৃষ্টি কর্তা এবং পূজারী ভবেন্দ্রনাথ রায়।
উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ এবং ঐতিহ্যবাহী জাগ্রত মা কালীর এই পুজোয় দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। ময়নাগুড়ি ব্লক বাদেও জলপাইগুড়ি জেলা তথা উত্তরবঙ্গের মানুষ এখানে আসেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর জাকজমক ভাবে মেলা বসলেও এবছর করোনার কারনে বসবে না সেই ধরনের মেলা। তবে যদিও কয়েকটি দোকান বসেছে তবে আগের মতো সাত দিন ব্যাপী মেলা হবে না বলেও জানান পুজো কমিটি। এই বাইশ হাত প্রতিমা গড়ার কারিগর তথা মৃৎ শিল্পী দয়াল পাল বলেন, এর আগে অনেক প্রতিমা তৈরি করেছি। তবে এই ধরণের প্রতিমা প্রথম করলাম। খুবই ভালো লাগছে এই ধরণের কাজ করতে পেরে। অনেক বড় বড় মাপের প্রতিমা এর আগে আমি তৈরি করেছি তবে সেটি মাটির তৈরি ছিল। কিন্তু এই প্রতিমাটি পুরোপুরি সিমেন্ট দিয়ে তৈরি।
এই প্রতিমার বিশেষত্ব হলো এই দেবীর ১০৮ টি মাথা রয়েছে । তবে অনেকে এই প্রতিমাটি তৈরি করতে পারে নি সেটি করতে পেরেছি নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই পুজো প্রসঙ্গে পুজোর প্রতিষ্ঠাতা এবং পূজারী ভবেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ২০০১ সালে এই পুজো শুরু করি। আমাকে পুজো করতে খুবই ভালো লাগে। সে সময় সকলে মিলে উদ্যোগ নিয়ে পুজো করলে সামান্য ঝামেলা বাঁধে এরপর আমি নিজেই নিজের খরচায় এই পুজো করি। কোনো রকম সহযোগিতা নেওয়া হয়নি কারোর কাছ থেকে। এখানে এই পুজোর ধামের নাম রাখা হয়েছে আমার স্বর্গীয় পিতা নন্দ রাম রায়ের নামে “নন্দ ধাম”। এখানে ৯ ধরণের মা কালীর স্থান রয়েছে। প্রথমে আমি সাত হাত কালীর স্থান দেই। এরপর ১১ হাত, ১৪ হাত ও ২২ হাত মা কালীর স্থান দিয়েছি। ২২ হাত কালীর পুজো ২০০৬ সাল থেকে শুরু হলেও এবছরই প্রথম পূর্ণাঙ্গ মূর্তিটিতে পুজো হলো।