জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ১০ই জানুয়ারী ২০২১ : রবিবার : নতুন বছর উদযাপনের জন্য পিকনিকের রমরমা চলে জানুয়ারি মাস। কিন্তু মরশুম চললেও পর্যটকদের ভিড় তেমন ভাবে দেখা যায়নি ময়নাগুড়ির খুকশিয়া উদ্যানে।
এর কারণ হিসাবে অনেকেই মনে করছেন দিন দিন হারাতে বসেছে ময়নাগুড়ির খুকশিয়া উদ্যানের জৌলুশ। করোনার কারনে দীর্ঘ মেয়াদি লকডাউনের কারনে ঘর বন্দি থেকেছে মানুষজন। সেই এক ঘেয়েমি থেকে বের হওয়ার জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে মানুষজন ছুটে এসেছেন ডুয়ার্সে। ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ ভিড় জমলেও ভিড় চোখে পড়েনি ময়নাগুড়ির খুকশিয়া উদ্যানে।
উল্লেখ্য, তৎকালীন বাম জামানায় ২০০৩ সালে ময়নাগুড়ির খাগড়াবাড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় নির্মিত হয় এই পার্কটি। তৎকালীন বাম সরকারের জেলা পরিষদ এবং বন সৃজনের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এই উদ্যানটি। ধীরে ধীরে উদ্যানের উন্নতি ঘটলেও বর্তমানে অবহেলিত হয়ে রয়েছে উদ্যানটি।
জানাযায় ২০১৫ সালে বর্তমান শাসক দলের হস্তক্ষেপে উদ্যানের সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি জেলা শাসক এবং পর্যটন শাখার পক্ষ থেকে সৌন্দর্যায়নের জন্য মোটা টাকা বরাদ্দ করা হয়। আর তার উদ্বোধন করেন ২০১৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর স্বয়ং বর্তমান শাসক দলের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সময় সৌন্দর্যায়ন করা হলেও ধীরে ধীরে তার অনেকাংশে বিলুপ্তি ঘটেছে। হারিয়ে গিয়েছে ২০১৫ সালের জৌলুশ। উদ্যানের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী সাধন মন্ডল বলেন, উদ্যানে এখন একেবারেই মানুষ কম আসেন। আগে এই পার্কে অনেক কিছু ছিল কিন্তু এখন তা নেই। এখানে আগে জলের ফোয়ারা, ঘোড়া, নৌকা, ছোটো বোট ছিল, তা এখন নেই। তাই অনেকেই উদ্যানে আসার আগেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি এই উদ্যানের সংস্কার করে আবার সেই জৌলুশ ফিরে আনা হোক।
ময়নাগুড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সীমা রায় বলেন, কোনো জিনিস যখন পুরোনো হয় তখন তা স্বভাবতই জৌলুশ হারায়। তবে এতো কিছু করা সবটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে করা সম্ভব নয়। তাই আমরা মৌখিক এবং লিখিত ভাবে বন দফতর, পর্যটন দফতর, জেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছি, কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। এছাড়াও কিছু কিছু মানুষ গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম বদনাম করার জন্য জেনে বুঝে সেখান থেকে জিনিস পত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা স্থানীয় মানুষদের সচেতন হতে হবে, কেন না এই উদ্যান গোটা ময়নাগুড়ির ঐতিহ্য। আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে চেষ্টায় আছি। বার বার জানানো হচ্ছে, তারা উত্তর দিলেই সংস্কার করা হবে।