জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ১৯ই জানুয়ারী ২০২১ : মঙ্গলবার : কথায় আছে “যেমন দ্যাও এর ত্যামন পূজা। মাশান দ্যাও এর ভাজা ভুজা”। রাজবংশী কামতাপুরী জনজাতির লোকদেবতা হলো মাশান। মাশান দেবতার পূজা যা ক্রমশঃ হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই মাশান দেবতার পুজোয় মেতে উঠলেন ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাউয়াগাব এলাকার মানুষ। ওই এলাকার নীলাবতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবছর তৃতীয় বর্ষ মাশান পূজার আয়োজন করেছে।
মঙ্গলবার ঢাক বাজিয়ে আড়ম্বর সহকারে পুজো করলেন মাশান দেবতার। ওই এলাকার বাসিন্দারা এই পূজাতে মেতে উঠলেন। পুরোদস্তুর রাজবংশী ঐতিহ্যকে বজায় রেখে মাশান দেবতার পরনে ছিল রাজবংশী সংস্কৃতির হলুদ গামছা। রাজবংশী সমাজে হারিয়ে যেতে বসা মাশান দেবতার পূজা আবার নতুন করে জনসমক্ষে তুলে ধরতেই এই পন্থা বলে জানান পুজো কমিটির সদস্যরা। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী কামতাপুরী ও আদিবাসী সংস্কৃতির লোক দেবতাদের মধ্যে অন্যতম মাশান দেবতা।
একসময় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই পুজো করার রীতি ছিল। কিন্তু কালের স্রোতে তা অনেকটাই হারাতে বসেছে। উল্লেখ্য যে রাজবংশী সমাজ সংস্কৃতিতে ১৮ রকম মাশান দেবতার পূজা করা হয়। বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন রীতিতে মাশনের পুজো হয়। কাউয়াগাব এলাকায় যে মাশান পূজিত হল তা গদা মাশান, ১৮ রকম মাশনের অন্যতম হলেন এই গদা মাশান।
এই দেবতার পুজোর উপচার হল কলা, দই, চিড়া। ঢাক ও ঢোলের বাদ্যি বাজিয়ে পূজা করা। মূলত গ্রামাঞ্চলে কোনো অশুভ শক্তি কিংবা খারাপ কিছু থেকে রক্ষা পেতেই এই দেবতার পুজো করে থাকেন রাজবংশী সমাজের মানুষ। রামশাই এর নীলাবতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা সেই উদ্দেশ্যেই এই পুজো করেন। এই পুজোয় প্রসাদ রূপে খাওয়ানো হয় দই, চিড়া, গুড়, লবন ও লঙ্কা।