দক্ষিন দিনাজপুর : গঙ্গারামপুর : ২৩শে জানুয়ারী ২০২১ : শনিবার : বহুদিন ধরেই গঙ্গারামপুরে একেবারে প্রশাসনের নাকের ডগায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবৈধ ভাবে কচ্ছপের মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বারবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও কোনো ফল হয়নি। কিছু সংখ্যক অসাধু কচ্ছপ ব্যবসায়ী ধরা পড়লেও কিছু অজানা কারণে আবার তারা ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে। গঙ্গারামপুরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্য দিবালোকে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা কচ্ছপ কেটে বিক্রি করছে।
কিন্তু কি করে তারা দিনের আলোয় এই কাজগুলো করতে সাহস পায়? নাকি প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করে বলেন, রবিবার গঙ্গারামপুর শহরের শিববাড়ি হাট সবচেয়ে বড়ো হাট। পাশাপাশি গঙ্গারামপুর থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে সোমবার নিউমার্কেটের হাট, এই দুই জায়গায় সপ্তাহে দুদিন প্রকাশ্যে নৃশংস ভাবে কচ্ছপগুলোকে হত্যা করে শুধু মাত্র বেশি টাকার লোভে বিক্রি করে চলেছে। প্রশাসন কেন কিছু বলে না, পুলিশের সঙ্গে এই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের কি গোপন আঁতাত রয়েছে। বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী হিসেবে বর্তমানে কচ্ছপের মাংস বিক্রি আইনত অপরাধ। কিন্তু তারপরেও চলছে কচ্ছপের পাচার, সেই সঙ্গে কচ্ছপ কেটে দেদার মাংস বিক্রি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বড়ো বড়ো হাটগুলি চোরাকারবারীদের মূল লক্ষ্য। বিহার থেকে বাংলাদেশে কচ্ছপ পাচার করার পথে পড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, কামারপাড়া, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাট ও সরাইহাট।
এদিকে যত দিন যাচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরে কচ্ছপের মাংসের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এক কেজি কচ্ছপ এর মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়, ফলে বেশি টাকা লাভের লোভে জেলায় বেশ বড় কারবার গড়ে উঠছে। বিহারের পূর্ণিয়া হয়ে ডালখোলা হয়ে রায়গঞ্জ হয়ে প্রতি সপ্তাহে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের সরাইহাট ও গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাটে বস্তাবন্দী করে কচ্ছপ আনা হয়। ফলে বস্তাবন্দী অবস্থাতেই মারা যাচ্ছে ছোট বড় বহু কচ্ছপ।
অন্যদিকে এই বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীটি ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে পড়ছে। আইনত কচ্ছপ ধরা বা মারা দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধুমাত্র প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে প্রাণীটি অঘোরে মারা পড়ছে। স্থানীয়দের দাবী, অতিসত্বর এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরে কঠোর শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি অবিলম্বে কচ্ছপের মাংস বিক্রি বন্ধ করা দরকার। তা না হলে এই নিরীহ প্রাণীটি আগামীতে এই পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে৷