19 C
New York
Wednesday, June 18, 2025

Buy now

spot_img

মারণ রোগে আক্রান্ত ছেলের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আশায় দিন গুনছেন পরিযায়ী শ্রমিক।

মালদা : ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : সোমবার : সংসার চালাতে পরিবার নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা এলাকার মামুন। সেখানে দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু আচমকাই নেমে আসলো বিপর্যয়। অসুস্থ বড়ো ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ধরা পড়ল ক্যান্সার। কিন্তু ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ চালানোর মত সামর্থ নেই পরিবারের। এখন ভরসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। সরকারের দিকে মুখ চেয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে ফিরে এসেছে রাজ্যে। কয়েক বছর ধরে রাজস্থানে দিনমজুরি করে কোনো রকমে দিন গুজরান করেন মামুন। সেখানে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই তার। এখন ভরসা একমাত্র স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। ভিন রাজ্যে বসেই শুনলেন নিজের এলাকায় প্রশাসনের তরফে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেওয়া হচ্ছে, সেই কার্ড থাকলে নিখরচায় ছেলের চিকিৎসা করাতে পারবেন।

তাই দেরি না করে ভিন রাজ্য থেকে হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রামের বাড়িতে ফিরলেন ক্যান্সারাক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক মামুন এর স্ত্রী নাসিমা খাতুন। বাড়িতে এসেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর জন্য আবেদন ও করেছেন। কপর্দকহীন ওই পরিযায়ী পরিবারের কাছে একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। কবে সেই কার্ড মিলবে, অসুস্থ ছেলেকে বুকে আঁকড়ে এখন সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন মা নাসিমা খাতুন। কুশিদা মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা মামুনের দুই ছেলে দুই মেয়ে। সংসার চালাতে হত পাঁচ বছর ধরে সপরিবারে আজমিরে থাকেন। লকডাউনেও সেখানে ছিলেন। কুশিদায় বাড়ি বলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়ি। আবেদন করেও আবাস যোজনায় ঘর মেলেনি, অভিযোগ তার।

সম্প্রতি আজমিরে বড় ছেলে নাসিরুদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা করার পরেই তার ক্যানসার ধরা পড়ে। ওই পরিযায়ী পরিবারটি যাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পায় তা নিয়ে নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মোহাম্মদ নূর আজম। প্রশাসনের তরফেও বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ বিডিও অনির্বাণ বসু জানান, আবেদনপত্র জমা পড়েছে। দ্রুত যাতে ওরা কার্ড পায় তা দেখছি। মামুনের দাদা মন্টু শেখ বললেন, মাস খানেক আগে থেকে ছেলেটি অসুস্থ। এলাকায় কোনো কাজ নেই। ভাই রাজস্থানে কাজ করে। আমরা বললাম বাচ্চাটিকে এখানে পাঠিয়ে দিতে। এখন সরকারের কাছে আবেদন যেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটি হয়ে যায়। এই কার্ডটা না হলে আমরা বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পারবো না। মা নাসিমা জানান, ছেলে ক্যানসার ধরা পড়েছে। টাকা পয়সা কিছুই নেই। এখন কী ভাবে চিকিৎসা করাবো? এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই ভরসা। না হলে ছেলেকে বাঁচাতে পারব না। এখন কবে কার্ড পাব সেদিকেই তাকিয়ে দিন গুনছি।

কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মোহাম্মদ নূর আজম বলেন, ওরা রোজগারের জন্য সপরিবারে আজমিরে থাকে। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার। আশা করছি দু-এক দিনে কার্ড হয়ে যাবে। ঐ পরিবার ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘরও পায়নি। এর আগের যে ডেটা অনুযায়ী কাজ হয়েছে তাতে পুরো গ্রামের নাম নেই। পরে আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর যে লিষ্ট করেছি তাতে ঐ পরিবারের নাম আছে। এখন এই দরিদ্র পরিযায়ী পরিবার পথ চেয়ে বসে আছে কবে তারা স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড পাবে এবং সমস্যার সমাধান হবে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!