জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১০ই ফেব্রুয়ারী ২০২১ : বুধবার : মালবাজারে মাউন্টেন ট্রেকার্স ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রেস মিট করা হলো পাখি পর্যবেক্ষনের উপর। ডুয়ার্সে মালবাজার ব্লকে অবস্থিত গজলডোবাতে বিশালাকারের জলাধারটি বিদেশি পরিযায়ী পাখির জন্য বিখ্যাত। সেখানে প্রায় সারা বছর কিছু পাখি দেখতে পাওয়া যায়, তাকে ঘিরেই পর্যটকদের ভীড় উপচে পরে। পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে – ব্রাহ্মণী হাঁস, মহাগাংছিল, কাদম্ব, বড়ি হাঁস, পিইং হাঁস, মৎস্য ভোজ, করাতি হাঁস ইত্যাদি। মালবাজারে মাউন্টেন ট্রেকার্স ফাউন্ডেশন এর সম্পাদক স্বরূপ মিত্র জানান যে, পাখির ডাক ও ফটোগ্রাফি প্রকৃতিতে যত রকমের পাখি আছে তাদের প্রত্যেকেরই বিভিন্ন রকম ডাক (Bird call) আছে।
নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করার ডাক (Communication call), প্রজননকালীন ডাক (Mating call), সচেতন করার ডাক (Alarm call ) , উড়নকালীন ডাক (Flight call) ইত্যাদি। নানা ধরনের ডাকের সাথে পরিচিত হতে পারলে, পাখি চিহ্নিত করা ও ছবি তোলার কাজ অনেকটা সহজ হতে পারে। ইন্টারনেটে অনেকগুলি ওয়েবসাইট আছে যার মাধ্যমে পাখির ডাক সম্পর্কে জানা যেতে পারে। তবে পাখির ডাকের অপব্যবহার সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে ফোটোগ্রাফাররা কৃত্রিম ভাবে পাখির ডাক ব্যবহার করেন। এই ক্ষেত্রে পাখিরা বিরক্ত হচ্ছে কি না সেই দিকে নজর রাখতে হবে। প্রজনকালীন সময় পাখির বাসার কাছাকাছি যাওয়া বা ছবি তোলা বা পাখির ডাক ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত। আমরা যারা পক্ষিপ্রেমী হিসাবে নিজেদের জাহির করি, তাদের পাখি দেখার নীতিশাস্ত্র সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান থাকা উচিত। পাখির পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় যেমন – দূষন, বাসস্থানের ধ্বংস, কীটনাশকের প্রভাব, পাখির শিকার ইত্যাদি সম্বন্ধে নিজেকে শিক্ষিত করতে হবে, তবেই একজন প্রকৃত ন্যায়বান পক্ষিপ্রেমী হয়ে উঠতে পারবো। এই বিষয়ে কিছু আলোকপাত করা হল। পাখি দেখার ক্ষেত্রে, সেই পাখি থেকে একটা উপযুক্ত দূরত্ব রাখা উচিত। বিধিনিষেধ যুক্ত এলাকাতে না যাওয়া, তাতে পাখির কাছাকাছি চলে যাওয়ায় সম্ভাবনা থাকতে পারে। কখনো পাখির বাসার কাছাকাছি যাওয়া উচিত নয়, তাতে পাখিটির ক্ষেত্রে ভীতি সঞ্চার হতে পারে এবং সে বাধ্য হয়ে সেই জায়গা ত্যাগ করে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে পারে। যে কোনো পাখিকে খুব পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখতে হলে, বিশেষ সরঞ্জাম ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন জুম লেন্স, বাইনোকুলার ইত্যাদি। এই পদ্ধতিতে পাখিরাও বুঝতে পারে না যে তাদের কেউ পর্যবেক্ষণ করছে। পাখি পর্যবেক্ষণের সময় পোশাকের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। এমন পোশাক পড়া উচিত যা পরিবেশের সঙ্গে মিশে যায় এবং দুর থেকে তা নজরে পরে না। যেহেতু গজলডোবা পর্যটকদের প্রিয় জায়গা তাই তিস্তা ব্যারেজে প্রচুর ভিড় থাকে কিন্তু আজকাল সেই এলাকা প্লাস্টিক, থার্মোকলে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে, দূষণ হচ্ছে নদীও। অতি দ্রুত প্রশাসনকে এর উপর ব্যাবস্থা নিতে হবে।