জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ৪ঠা মার্চ ২০২১ : বৃহস্পতিবার : বিফাই মাহালি, সন্তোষ লোহার, মঙ্গল বিশ্বাস, সুরজ রাজভর, সুহানি উরাও এদের কারো বাড়ি ক্রান্তি, আবার কারও বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষীকান্তপুরে। কেউ এসেছে মরাঘাট ও নাগরাকাটা থেকে। এদের মধ্যে একটাই মিল ও সম্পর্ক রয়েছে, পৃথিবীর আলো এদের চোখে ধরা পড়ে না। প্রকৃতির রঙের বাহার এরা উপলব্ধি করতে পারে না। তবু প্রকৃতির গাছপালা, নদী, পশুপাখি হাতে ছুঁয়ে তাদের সম্পর্কে জানতে হাজির হয়েছে প্রকৃতিপাঠ শিবিরে।
বৃহস্পতিবার মালবাজার মহকুমার মুর্তি নদীর ধারে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন পরিবেশ প্রেমী সংস্থা হিমালয়ান ন্যাচার এন্ড এডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে দৃষ্টিহীনদের নিয়ে ১৯ তম প্রকৃতিপাঠ শিবির। তাদের এই কাজে সাহায্য করেছে লাটাগুড়ি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, গয়েরকাটার আরন্যাক ও গরুমারা ওয়াইল্ড লাইফ ডিভিশন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ শিবিরের যৌথ ভাবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গরুমারা ওয়াইল্ড লাইফ ডিভিশনের ডিএফও নিশা গোস্বামী ও পদ্মশ্রী করিমুল হক। উপস্থিত ছিলেন ইন্ডং চা-বাগানের ম্যানেজার রজত দেব, নাগরাকাটার বিশিষ্ট সমাজ সেবী রামসুরত মাঝি সহ অন্যান্যরা। উদ্যোগী সংস্থা ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, এজাতীয় ক্যাম্পের মাধ্যমে দৃষ্টিহীন ও বিশেষভাবে শারীরিক সক্ষম ছেলে-মেয়েরা স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। এটা ১৯ তম বার্ষিক শিবির। এবছর ক্যাম্প করা নিয়ে সংশয় ছিল।
পরে স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায় আজ এখানে ৬০ জন ক্যাম্পারস, গাইড অফিসিয়াল নিয়ে মোট ১২৫ জনের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট হয়। সুখবর সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিন দিনের এই ক্যাম্প শনিবার শেষ হবে। এই তিন দিনে হাতে কলমে ওদের নদী পাড় করা, পশু ও গাছপালা চেনানো হবে। ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, এজাতীয় ক্যাম্পে ছেলে-মেয়েরা অনেক কিছু শিখতে পারে। এই সব ছেলে-মেয়েরা সারাবছর বাড়িতেই থাকে। বাইরে বের হতে পারে না। ক্যাম্পের এই কয়দিন আনন্দের মধ্যে দিয়ে ওদের কাটে। এটা ওদের কাছে শিক্ষনীয় হয়ে ওঠে।