মালদা : ৬ই মার্চ ২০২১ : শনিবার : নতুন এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট কেনা কে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা আর তার জেরেই স্বামীর প্রতি অভিমান করে স্ত্রী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হবিবপুর থানার আইহো রতিরাম পাড়া এলাকায়। নিজের শোবার ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে গৃহবধূ। মৃতদেহটি ঘর থেকে উদ্ধার করে হবিবপুর থানার পুলিশ শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। মৃত গৃহবধূর নাম কাকলি মণ্ডল বয়স ২৩। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মাস আগে গৃহবধূর হবিবপুরের চাঁদপাড়া এলাকার নিরাময় মন্ডলের সাথে বিবাহ হয়। নিরাময় মন্ডল পেশায় শ্রমিকের কাজের সাথে যুক্ত। সামাজিক ভাবেই তাদের বিয়ে হয়। বর্তমান আধুনিকতার সঙ্গে পাল্লা দিতে গৃহবধু তার স্বামীর কাছে একটি এন্ড্রয়েড এর দামি মোবাইল ফোন চেয়ে বসে। তেমন রোজগার না থাকায় স্বামী নিরাময় মন্ডল নতুন মোবাইল ফোন কিনে দিতে অস্বীকার করে গৃহবধূকে। যার ফলে স্বামীর প্রতি রাগ করে চারদিন আগে বাবার বাড়িতে চলে আসে গৃহবধূ। তার বাবার বাড়ি হবিবপুর থানার আইহ রতিরামপাড়া এলাকায়।
মৃত গৃহবধূর বাবা নীলকান্ত চক্রবর্তী জানান, চার দিন আগে শ্বশুর বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে আসে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী এক ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে তারা বাড়ির সকলে চলে আসে। তখন তার মেয়ে কাকলি মণ্ডল বাড়িতে একাই ছিল। নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ খেয়ে রাতে বাড়িতে এসে শোয়ার ঘরে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে শনিবার দুপুরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। মৃত গৃহবধূর বাবা নীলকান্ত চক্রবর্তী পেশায় একজন গাড়িচালক। তার ২ মেয়ে ১ ছেলে। এটি ছোট মেয়ে ছিল। সাত মাস আগেই তার সামাজিক মতেই বিয়ে হয়। তবে মৃত গৃহবধূর বাবা স্বীকার করেছে যে তার মেয়ের প্রচন্ড জেদ ছিল। আত্মহত্যার পিছনে মোবাইল ফোন কেনার বিষয়টি তার বাবার মুখ থেকে উঠে আসে। ফোন কেনার জন্য জামাইকে চাপ সৃষ্টি করেছিল। তারা বিষয়টি জানতে মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। এদিকে শুক্রবার রাতে নিমন্ত্রণ বাড়িতে যাবার সময় তার মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়ে ছিল পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তার মেয়ে সেখানে যাবে না বলে জানায়। তারপরই রাতে বাড়িতে ফিরে এসে মেয়ের এই কান্ড কারখানা দেখে অবাক হয়ে যান পরিবারের লোকেরা। শনিবার দুপুরে হবিবপুর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মৃত দেহকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।