জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১২ই এপ্রিল ২০২১ : সোমবার : শিতলকুচির ঘটনা বাঙালিকে মারার পুর্ব পরিকল্পিত। ছয় মাস আগেই এই ঘটনার পরিকল্পনা হয়েছিল। ছয় মাস আগেই বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু তার ভাষনে বলেছিলেন, সিআরপিএফকে বলেছি বেশি বাড়াবাড়ি করলে বুক লক্ষ্য করে গুলি করুন। শিতলকুচির ঘটনার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীলিপ ঘোষ বলেছেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে শিতলকুচির ঘটনা আরও হবে, দুটি ঘটনা ঈঙ্গিত দেয় শিতলকুচির পুর্ব পরিকল্পিত।
সোমবার মাল ব্লকের ওদলাবাড়িতে মাল বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বুলু চিকবরাইকের সমর্থনে প্রচারে এভাবেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন সর্বভারতীয় যুব তৃনমুল কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। শুধু বিজেপিকে আক্রমণ নয় সায়ন্তন বসু ও দীলিপ ঘোষের অডিও শুনিয়ে গত শনিবার কোচবিহার জেলার শিতলকুচির ঘটনা সম্পর্কে এই মন্তব্য করেই নিজের ভাষন শুরু করেন। শিতলকুচির ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এদিন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় তার ভাষনে বলেন, এই নির্বাচনে একদিকে বহিরাগত হামলাবাজ নেতাদের ভাষন, অন্যদিকে বাংলার নিজের মেয়ে আর দুয়ারে র্যাশন। আপনারা কাকে চান? বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রতি একাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পৌঁছে দেবে। কেউ পেয়েছেন? ওরা বলেছিল দেশের বিকাশ হবে। বিকাশ তো হয়নি উল্টো দেশের রেল, বিমা সহ অন্যান্য রাস্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে।
দিদির সাথে মোদির পার্থক্য কি জানেন? মোদি যে গ্যাসটা দেয় তার দাম হাজার টাকা গ্যাস আর সেই গ্যাসের উপর হাড়িতে যে চাল শেদ্ধ হয় সেটা দিদি দেয় বিনেপয়সায়। এই ভাবেই টানা ৫০ মিনিট ভাষনে বিজেপিকে একের পর এক আক্রমণ করে যান যুব নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। বুলুচিক বরাইকের সমর্থনে এদিন শ্রী বন্দোপাধ্যায় দুপুর ১ টা নাগাদ ময়নাগুড়ি থেকে হেলিকপ্টারে ওদলাবাড়িতে এসে পৌছান। ওদলাবাড়ি বিধান পল্লী ফুটবল মাঠে তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যানী, ব্লক সভাপতি তমাল ঘোষ, প্রার্থী বুলু চিকবরাইক, মাল পৌরসভার প্রশাসক স্বপন সাহা, জেলা যুব তৃনমুল কংগ্রেস সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জি প্রমুখ। হেলিকপ্টার থেকে নেমে সোজা মঞ্চে এসে ওঠেন। মঞ্চের সামনে তখন প্রায় হাজার ত্রিশ মানুষ তাকে হাত তুলে স্বাগত জানায়। এরপর মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। প্রথমেই শিতলকুচির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই ঘটনা পুর্ব পরিকল্পিত এবং তার অডিও শোনান। এরপর লাগাতার বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, বিজেপি নেতারা জুমলাবাজ ও বহিরাগত। গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে এরাজ্যে আসতে দেখা যায়নি। নির্বাচনের সময় এসে ভাষন দিয়ে যাচ্ছে। গত ৭ বছরে যা বলেছিল পালন করেনি। মিথ্যা কথা বলে চলছে।
ওরা ১০ শতাংশ মানুষের জন্য আয়ুস্মান ভারত প্রকল্প করেছে আর মমতা বন্দোপাধ্যায় এই বাংলার প্রতিটি ঘরে বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পৌঁছে দিয়েছে। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, জয়জোহার পেনশন সহ নানান প্রকল্প মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। আর বিজেপি একের পর এক রাস্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করার ভবিষ্যতে চিন্তা থাকবে না। পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিটি আদিবাসী মহিলাদের মাসিক ১০০০ টাকা ও সাধারণ পরিবারের মহিলাদের ৫০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেবে। আগামী ২ মে ভোটের ফল প্রকাশ হবে। আমরা ২৫০ আসন নিয়ে সরকার গড়ব। মুখ্যমন্ত্রী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার প্রতিটি পালন করা হবে। আমরা যা বলি তাই করি। বিজেপি শুধু ভাষন দিয়ে যায়। তাই আগামী ৫ বছর যদি ঘরে ঘরে র্যাশান চান তবে তৃনমুল কংগ্রেস প্রার্থীকে জয়ী করুন। এভাবেই টানা আক্রমণ করে শ্রী বন্দোপাধ্যায় তার ভাষন দেন। এরপর সভা শেষ করে হেলিকপ্টার করে অন্য কর্মসূচীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।