মালদা : ৭ই মে ২০২১ : শুক্রবার : পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পর্ব শেষ। ক্ষমতা ধরে রাখলেন মমতা। আশানুরূপ ফল করতে ব্যর্থ বিজেপি। বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থন নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য মসনদে বসলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে এর আগে কোনো দিনই মালদহে খাতা খুলতে পারেনি সেখানে মালদহতেও অদ্ভুত পূর্ব সাড়া পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে জেলার তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। এই দিন বিজয় মিছিলে কোমরে দড়ি বেঁধে গ্রামে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লাঠি পেটা করলেন মোদি-অমিত শাহ মুখোশধারী দুই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাকে। ‘বাংলায় আর আসবি,দিদিকে নিয়ে ব্যঙ্গ করবি’ এই শ্লোগান তুলে মজার ছলে মোদি-অমিতকে মারতে থাকে তৃনমূল কর্মী ও সমর্থকেরা। এমনই দৃশ্য দেখা গেলো শুক্রবার সকালে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এক বিজয়ী মিছিলে। মোদি-অমিতের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও তৃণমূল সমর্থক ও কর্মীদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এদিন মুখোশধারী মোদি-অমিতকে দেখার জন্য ঘর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসে শিশু থেকে মহিলারা। বাংলায় যে মোদি-অমিতের কোনো স্থান নেই তা এই মিছিলে প্রমানিত হল বলে জানান তৃণমূল কর্মীরা।
তৃণমূল কুশিদা অঞ্চল সভাপতি মহম্মদ নুর আজম জানান, সমস্ত গ্রাম আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছিল। কারণ আমাদের জন দরদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠন করেছে। সেই আনন্দে আমরা প্রচুর আনন্দিত। আমরা সমস্ত গ্রামবাসী মিলে এক বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত করলাম। বিজয় মিছিলের আকর্ষণীয় বিষয় ছিল মোদী এবং অমিত শাহের মুখোশ পরিহিত দুই বিজেপি কর্মীকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হল। আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চাইনা, আমরা সকলের মেল বন্ধন চাই।
জেলা বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনার তীব্র কটাক্ষ করে। হরিশ্চন্দ্রপুর মন্ডল সভাপতি রূপেশ আগারওয়াল বলেন, আজ আমি নিজেও দেখলাম আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখোশ পরিয়ে দুইজন মানুষকে নিয়ে কী নোংরামো করল। তৃণমূলের সংস্কৃতি কী তা সবাই জানে। জন সাধারণ তার রায় জানিয়েছে। আগামীদিনে মানুষ নিশ্চয়ই বুঝবে যে তারা কী ভুল করেছে। আজ আমরা ৩ থেকে ৭৭ হয়েছি। আগামীদিনে আরও ভালো ফলাফল করব।
এবার ২০০ পার এর স্লোগান দিয়েছিল বিজেপি। আর সেই স্লোগানের বাস্তবায়ন করে দাপটের সঙ্গে ক্ষমতায় ফিরলেন ‘বাংলার মেয়ে’। নির্বাচনী ভোট প্রচারে যে নন্দীগ্রামে মমতার স্কুটার পড়ে যাবে বলে কটাক্ষ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, সেই নন্দীগ্রামে হেরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে অবশ্য তৃণমূলের বিজয় রথ আটকায় নি। মমতার নেতৃত্বে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে তৃণমূল। গতবারের তুলনায় যেমন আসন সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই প্রাপ্ত ভোটের শতাংশেও ইতিহাস তৈরি হয়েছে। বরং মোদী-অসমিত শাহের স্বপ্নের উড়ান গোত্তা খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল। এটাই তৃণমূল কংগ্রেস এর নেতা-নেত্রীদের দাবী।