মালদা : ১২ই মে ২০২১ : বুধবার : পবিত্র ঈদে হাতে বানানো সেমাই আজও প্রচলিত চাঁচলের গ্রামগুলিতে।ঈদের সকালে দুধ দিয়ে রান্না করা ধোঁয়া সেমাই খেতে। তারপরেই ঈদের নামাজ পড়তে ছুটে সকলে। আর সম্ভাব্য আর একদিন বাদেই দেশজুড়ে পালিত হবে মুসলিমদের পবিত্র ঈদুল ফেতর। তার আগেই সেমাই তৈরীতে ব্যস্ত গ্রামের গৃহবধূরা।
যুগের পরিবর্তন ঘটলেও বাজার থেকে হরেক রকমের লাচ্ছা সেমাই ক্রয় না করেই হাতে তৈরীতে সেমাই বিষয়টির সঙ্গে একান্তভাবে জড়িয়ে রয়েছেন গ্রাম বাঙলার নারীরা। সেমাই বানানোর যন্ত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ আটার মণ্ড রেখে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সেমাই তৈরি করছে বাড়ির নারীরা,মদত দিচ্ছেন ঘরের ছেলেরাও। যদিও এখন ঘরে ঘরে এই সেমাই তৈরি প্রক্রিয়াও প্রায় অপ্রচলিত হয়ে গেছে। তবে এমন দৃশ্য ধরা পড়ল। মালদহের চাঁচল থানার কলিগ্রাম নিমতলায় একটি পরিবারে নারীরা এই উদ্যোগ নিয়েছে।
তারা সকলেই কেউ গমের আটা বা কেউ ময়দা দিয়ে স্বাভাবিক জলে আটা মাখিয়ে মিশ্রভাবে ঠুসে দিচ্ছেন সেই হাতল যন্ত্রের মুখদ্বারে। পাশে দুজন বসে হ্যান্ডেল ঘুরাচ্ছেন। আর এভাবেই এক মিনিটের মধ্যে দফায় দফাই সেমাই বের হতে থাকে। তারা জানালেন এক কেজি আটার সেমাই তৈরি করতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে। তারপরে রৌদ্রে শুকোতে দেওয়া হয়। তবে বাজারে হরেক রকমের লাচ্ছা ও সেমাই পাওয়া যায়। ওইসব বাদ দিয়েই কেন এই পরিবারের লোকরা এই উদ্যোগ নিচ্ছে? তাদের পরিবারের জাহাঙ্গীর আলম, শেরিনা খাতুন, মৌসুমী, নুরবানু, মাসুমা খাতুনরা জানালেন, বাজারের সেমাইয়ে কতধরনের কি জাতীয় তেল মেশানো হয় আমরা নিজেও জানিনা। তবে সেগুলো রান্না করলে পেটের ক্ষতি করে।
তাই ভেজাল মুক্ত এবং স্বচক্ষে দেখে নিজের বাড়িতেই তৈরি করছি সেমাই। আর এই প্রথা তাদের প্রায় পাঁচ পুরুষ ধরে চলে আসছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। তবে বানানো সেমাইয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেমাই অর্থাৎ কারখানায় বানানো সেমাই। এতে করেও হাতে বানানো সেমাই খাওয়ায় ভাটা পড়েনি খুব একটা। কোনো কোনো পরিবারে এখনো বাজারের কেনা সেমাইয়ের পাশাপাশি ঐতিহ্য মেনে ঈদে হাতে বানানো সেমাই খাওয়া হয়,খাওয়ানো হয়।এরীতি প্রতিটি ঘরে ঘরে আজও প্রচলিত।