জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১৫ই জুন ২০২১ : মঙ্গলবার : করোনায় মৃত বাড়ির অভিভাবক, অসুস্থ বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা কিন্তু গাড়ির অভাবে চিকিৎসা বা করোনা পরীক্ষা করাতে পারছে না কেউ। এমন কি গ্রামবাসীদের বাধায় সরকারী কল থেকে পানীয় জল নিতে পারছে না এই অসুস্থ্য পরিবার।
জানাযায়, বাড়িতে কয়েকদিন অসুস্থ্য থাকার পর মালবাজার হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু হয় অমল দাসের (৪৩)। মালবাজার ব্লকের গাজোলডোবার সাত নম্বর কলোনীর ঘটনা। মৃতের বাড়ির আরো বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে অসুস্থ। গাড়ি না আসার কারনে বাড়ির অসুস্থ্যদের, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এনে পরীক্ষা বা চিকিৎসা করাতে পারছে না। পাশাপাশি গ্রামের লোকেরাও কোন রকম সাহায্যের হাত বাড়াতে ভয় পাচ্ছে। এমনকি সরকারী কলে জল আনতে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পরছে মৃতের বাড়ির লোকজন। মৃতের ভাই মিঠু দাস বলেন, দাদা বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ্য ছিলো। স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে ঔষধ খাওয়াচ্ছিলাম। শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে, টোটো করে ২২ কিলোমিটার দূরে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করি। রবিবার মারা যায় দাদা। মঙ্গলবার দাদার মৃতদেহ মালবাজার শ্মশানঘাটে দাহ করি। মৃতের ভাই মিঠু দাস আরো বলেন, দাদাতো মারা গেছেন কিন্তু বাড়িতে ৪-৫ জন অসুস্থ্য আছে। তাদের করোনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা করাতে পারছি না। কারন আমাদের কেউ কোন গাড়ি দিচ্ছে না। যে গাড়িতে এসে ওদলাবাড়ি বা মালবাজার হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করবো। পাশাপাশি সরকারী কলেও জল আনতে বাধা দিচ্ছে গ্রামের লোকজন। এই অবস্থায় বড় বিপদে পড়েছি আমরা। কোন রকম সাহায্য বা সহযোগিতা পাচ্ছি না। মৃতের ছেলে অমিত দাস বলেন, আমারও শরীর খারাপ এই অবস্থায় স্কুটিতে করেই বাবার শেষকৃত্ত সম্পন্ন করতে মালবাজার এ এসেছিলাম। বাড়িতে বয়স্ক দুজন এবং মার শরীরও ভালো না। করোনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা করাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতে পারছি না। কারন কোন গাড়ি আমাদের বাড়িতে আসছে না করোনার ভয়ে। এই অবস্থায় বাড়িতেই সবাই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে রয়েছি। ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়াও হচ্ছে না। আমরা চাইছি আমাদের কেউ সাহায্য করুক।
এব্যাপারে ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মধুমিতা ঘোষ বলেন, এব্যাপারে অসুস্থ্যরা যাতে চিকিৎসা বা করোনা পরীক্ষা করাতে পারে, তার জন্য একটি গাড়ি ব্যাবস্থা করছি। তবে যারাই ওই পরিবারের সাথে খারাপ ব্যাবহার বা জল আনতে বাধা দিচ্ছে, সেটা ভারী অন্যায় কাজ। গ্রামের মানুষেরা দূরে থেকেও ওই পরিবারকে সাহায্য করতে পারে। এব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সাথে কথা বলছি। যাতে উনাদের সাহায্য করা যায়।