মালদা : ১৯শে জুন ২০২১ : শনিবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : নিজের বাবা, মা, বোন ও দিদাকে খুন করে বাড়ির বেসমেন্টে চার মাস পুঁতে রাখার অভিযোগে গ্রেফতার এক যুবক। সমাজ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকত। ঘরে ল্যাপটপ, একাধিক ফোন, সাউন্ড সিস্টেম, টিভি, সিসি ক্যামেরা সমেত বহু অত্যাধুনিক গ্যাজেট উদ্ধার। বাইরের কারও প্রবেশের অনুমতি ছিল না বাড়িতে। নিজের বাড়িতেই ল্যাব তৈরি করেছিল সে।
বাড়ির চার জনকে খুন করে মাটির নিচে পুঁতে রাখার অভিযোগ। এই অভিযোগে মোহাম্মদ আসিফ নামে এক যুবককে আটক করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকার ঘটনা। এলাকা পরিদর্শনে আসে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। খোঁজ পাওয়া যায় সুরঙ্গের। তবে কি কারনে এই সুরঙ্গ তারও তদন্তে পুলিশ। ঘটনা ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম আলেক নুর বেওয়া(৭২),ইরা বিবি (৩৬), রিমা খাতুন (১৬)জাওয়াদ আলি (৫৩)। স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান,মহাম্মদ আসিফ ওরুফে হান্নান বলে এলাকায় পরিচিত। সে স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এরপর থেকে সে বাড়িতেই থাকতো। এমনকি তার বাড়িতে কাউকেই প্রবেশ করতে দিতো না। তার এক দাদা রয়েছেন। তাকেও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে ভয়ে চার মাস পালিয়ে বাইরে থাকত। স্বাভাবিক ভাবেই সে ও তার পরিবারের চার সদস্য নিয়ে এই বাড়ির মধ্যেই থাকতেন। স্থানীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বড় দাদার যোগাযোগ থাকলেও ছোট ভাইয়ের কোন যোগাযোগ ছিল না।
প্রতিবেশীদের বাড়িতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ ছিল। কোন কাজে বাড়িতে আসলে তাদেরকে বাইরে থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হত। সেই ভাবে তাদের সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপরই শুক্রবার তার দাদা বাড়িতে ফিরে আসে। সমস্ত ঘটনা প্রতিবেশীরা জানতে পারে যে চারজনকে সে বাড়ির ঘরের মধ্যে পুঁতে রেখেছে। ঘটনার খবর পেয়ে কালিয়াচক থানার পুলিশ এসে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। আরো জানা গিয়েছে, আসিফের বাবার প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। মাঝে মাঝে তার বাবার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে সে খরচ করত। তবে কি উদ্দেশ্যে খরচ করা হচ্ছে সেটা কখনই তাদেরকে বলতো না। এখনো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়নি বেলা গড়ালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেই মৃতদেহগুলি উদ্ধারের কাজ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য রয়েছে। অভিযুক্ত ছেলে কে আটক করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। যদিও ধৃতের কাকা নৌসাদ মহন্মদ জানান, ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন কমপিউটার কিনেছিল। সে জানিয়েছিল সে একটি অ্যাপ তৈরী করছে। সেই কারনে টাকার দরকার। সেই কারনে সে বাবার সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখিয়ে নেয়। এরপর থেকে বাড়ির বাইর বের হত না। এদিন তার দাদার কাছ থেকে সমস্ত ঘটনা জানা যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, তিনি বলেন, কি করে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো তা বুঝতে পারছি না। এই নিয়ে আমি প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে কি ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা আমরা পুলিশকে বলব, সঠিক তদন্ত করতে।