26 C
New York
Friday, June 20, 2025

Buy now

spot_img

দুষ্কৃতিদের রুখতে এককাট্টা পুলিশ-বাবসায়ী। যান্ত্রিক নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রধান এলাকাগুলি।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৪ঠা জুলাই ২০২১ : রবিবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) :  অবস্থানটাই সুবিধেজনক। তাই নিজেদের অপারেশনে বারবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরকে বেছে নিয়েছে সমাজ-বিরোধীরা। দুষ্কর্ম করে একবার বিহারে ঢুকে পড়তে পারলেই হল। তাহলে এই রাজ্যের পুলিশ আর তাদের নাগাল পাবে না। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে দুষ্কৃতীদের সফ্‌ট টার্গেট হরিশ্চন্দ্রপুর। এখানে যেমন অনেক বনেদি পরিবার রয়েছে, তেমনই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসাবে হরিশ্চন্দ্রপুরের নাম রয়েছে মালদা থেকে শুরু করে প্রতিবেশী রাজ্যেও। তাই মাঝে মধ্যেই চুরি, ছিনতাই, এমনকি গোলাগুলি চলার খবরও উঠে আসছে এই এলাকা থেকে। করোনা আবহে দুষ্কৃতিদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। দুষ্কৃতিদের রুখতে এবার আরও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। যান্ত্রিক নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রধান এলাকাগুলি। এক্ষেত্রে পুলিশের তরফে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতিরও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। শনিবার রাতে এনিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় দু’পক্ষের মধ্যে এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।

মালদা জেলার পশ্চিম প্রান্তে হরিশ্চন্দ্রপুরের অবস্থান। পাশেই বিহার। এখান থেকে প্রতিবেশী রাজ্যে যাওয়ার একাধিক পথ রয়েছে। দীর্ঘদিন আগে থেকেই হরিশ্চন্দ্রপুর এই জেলার অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। জমিদার প্রথা বিলোপের পরেও তার গায়ে লেগে থাকা সেই সুনাম অক্ষুন্ন। তাই অনেক আগেই হরিশ্চন্দ্রপুরে ব্যবসার পত্তন করেছিলেন একাধিক ব্যবসায়ী। তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একাধিক ব্যাংক ও অর্থ আদানপ্রদানকারী সংস্থার দপ্তর। এভাবেই ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার বাড়তে থাকে। বর্তমানে হরিশ্চন্দ্রপুর শুধু জেলা বা রাজ্য নয়, দেশেও অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। সে কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার সোনালি চতুর্ভূজ সড়ক যোজনায় হরিশ্চন্দ্রপুরের কথা মাথায় রেখেছে বলেই মনে করেন জেলাবাসীর একাংশ। কিন্তু ব্যবসার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুরের উপর নজর পড়ে দুষ্কৃতীদের। শুধু স্থানীয় নয়, বিহারের দুষ্কৃতীদেরও সফ্‌ট টার্গেট এই এলাকা। মাঝেমধ্যেই এখানে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এমনকি অপারেশন নিশ্চিত করতে গুলিগোলা চালাতেও দুষ্কৃতীরা পিছ-পা হয় না। তারা জানে, দুষ্কর্ম করে একবার বিহারে ঢুকে পড়তে পারলে এই রাজ্যের পুলিশ তাদের ছুঁতে পারবে না। দুই রাজ্যের প্রশাসনিক সমণ্বয় তৈরির ক্ষেত্রেও অনেকটা সময় লেগে যাবে, ততদিন তারা নিশ্চিন্ত। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কাজ সেরে দুষ্কৃতীরা প্রতিবেশী রাজ্যে ঢুকে পড়ে। তারা এখন হরিশ্চন্দ্রপুরের মূল এলাকাকেও টার্গেট করতে শুরু করেছে। তাই এবার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাকে সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এ নিয়েই শনিবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এক বিশেষ বৈঠক হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে।

বৈঠকের পর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুরের মূল এলাকায় দুষ্কৃতীদের রুখতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। এতে এই এলাকা সুরক্ষিত থাকবে। কোনও দুষ্কর্ম হলে আমরা দুষ্কৃতিদের চিহ্নিতও করতে পারব। আপাতত হরিশ্চন্দ্রপুর বাজার, বারোদুয়ারি, স্টেশন, ব্লক ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা এবং তুলসীহাটায় এখন ক্যামেরা লাগানো হবে। কারণ, এই এলাকাতেই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বেশি রয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা ক্যামেরা লাগাতে পারব।

অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ প্রবীণ কেডিয়া বলেন, এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে থানার আইসি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমরা এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আশা করা যাচ্ছে, দিন দশেকের মধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রধান ব্যবসায়িক এলাকাগুলি সিসিটিভির নজরদারিতে চলে আসবে। পুলিশের এই সিদ্ধান্তে আমরাও দুষ্কৃতীদের নিশানা থেকে রক্ষা পাব বলে মনে করছি।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!