উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৮শে জুলাই ২০২১ : বুধবার : করোনা ভাইরাসের কারনেই কাজ কর্ম নেই। বাড়ি বসে বসেই সময় কাটছিলো বাবা, ছেলে এবং বৌমার৷ তাই বাবাকে শিলিগুড়ি নিয়ে গিয়ে ভালো কাজের জোগার করে দেবে ছেলে। এই প্রলোভন দেখিয়ে বাবার কাছ থেকে জমানো টাকা এবং বাড়ি ঘর বিক্রি করে পালিয়ে গেলো গুনোধর ছেলে।
অসহায় বাবা কোন উপায় না পেয়ে রাস্তার পাশে প্রতিক্ষালয়ে রাত্রী যাপন করছে। খেতে না পেয়ে শরীরে বাসা বেধেছে নানা রোগ। গুনোধর ছেলের নাম বিনোদ কানু(৩৭)। অসহায় বাবার নাম রাম চন্দ্র কানু(৬১)৷ মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি ডিপো পাড়া এলাকার ঘটনা। এদিন ওদলাবাড়ি সেচ্চাসেবী সংগঠন ন্যাস এর সদস্যরা অসহায় এই ব্যাক্তিকে দেখতে পেয়ে মাল ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। সংগঠনের উদ্যোগে ওদলাবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে এই ব্যাক্তির। অসহায় এই ব্যাক্তি রাম চন্দ্র কানু বলেন, আমি ওদলাবাড়ি একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতাম কিন্তু লকডাউনের জন্য কাজ আর নেই। ছেলেরও কাজ নেই। তাই একদিন ছেলে আমাকে বললো বাবা, আমরা এখানকার বাড়ি বিক্রি করে শিলিগুড়ি যাই। সেখানে অন্য দোকানে দুজনেই কাজ করবো। আমার কাছে কিছু টাকা ছিলো সেই টাকাও ছেলে নিয়ে নেয়। আমি ভাবলাম শিলিগুড়ি গেলে ভালোই কাজ পাবো। তাই ছেলে কথায় বাড়ি বিক্রি করার সম্মতি দিয়ে দেই। গত ১ মাস আগে বাড়িঘর বিক্রি করে ছেলে এবং ছেলের বৌ আমাকে প্রতিক্ষালয়ে বসিয়ে কোথায় চলে গেছে তার আর খোজ নেই। এখন এই প্রতিক্ষালয়ে দিন রাত কাটাচ্ছি। এটাই এখন আমার ঘরবাড়ি। তবে ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করার জন্য শরীর দুর্বল। হাটা চলার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বহু খোজ করেও ছেলের সন্ধান পাইনি আমি।
এব্যাপারে ওদলাবাড়ি সেচ্চাসেবী সংগঠন ন্যাসের সম্পাদক নফসর আলী বলেন, কয়েকদিন যাবৎ এই ব্যাক্তিকে ওদলাবাড়ি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক এর পাশে প্রতিক্ষালয়ে মধ্যে থাকতে দেখছি। খাওয়া দাওয়া ঠিকঠাক না হওয়ায় দুর্বল হয়ে গেছে। এই ব্যাক্তি আমাদের বলে, ছেলে বাড়িঘর বিক্রি করে, আমায় প্রতিক্ষালয়ে ফেলে চলে গেছে। এখন আমরা ওই ব্যাক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছি আমরা। পাশাপাশি উনার ছেলের খোজ চালাচ্ছি।