উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৮শে জুলাই ২০২১ : বুধবার : প্রকৃতির ডাকে নিয়ম করে আসে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস। ঝরে যায় ঘনঘোর বৃষ্টি , বয়ে যায় জলের শ্রোত , ভরে যায় পাহাড়ি ঝরনা, হয়ে উঠে জঙ্গল সবুজ। হ্যাঁ ঠিক এই দৃশ্যটা কে উপভোগ করার জন্য উনবিংশ শতাব্দী ব্রিটিশ সাহেবরা এই জায়গায় নিজের পছন্দের তালিকাভুক্ত করেছিল শুধু ঘুরতে নয়।
পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করার জন্যও। তাই জঙ্গল থেকে গাছ কেটে ঘোড়া বা টাট্টু করে এই গাছগুলো নিয়ে যেত তাদের আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য। আসা যাওয়ার পথ ছিল দুর্গম, তাই ১৯৩৪ সালে সেবকের করোনেশন ব্রীজের আদলে একটি ব্রিজ ও একটি লোহার ব্রিজ নিদর্শন রেখে গেছে এই ব্রিটিশ সাহেবরা। যাতে অতি সহজেই প্রকৃতির সম্পদ কে লুণ্ঠন করা, আর লুন্ঠিত সম্পদ সহজেই তাদের স্বার্থের জন্য ব্যবহারিত করতে পারে।
তাই দুর্গম এলাকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা যেন সুগম হয় তার জন্য তৈরি করেছিল এই দুটো ব্রিজ। বন থেকে গাছ কেটে নিলেও প্রকৃতিকে লুণ্ঠন করতে পারেনি । আজও অপরূপ সুসজ্জিত সুন্দরী আর অসংখ্য ঝর্ণা বয়ে যাচ্ছে তার শরীরের অঙ্গ থেকে। তাই আজও কালিমপঙ জেলার গরুবাথান ব্লকের গীতখোলা অপরূপ সুন্দরী। পাহাড়ি পথে এই নদী নিজের নাম পরিবর্তন করতে করতে আসে। প্রথমে ডুডখোলা তারপর গীত খোলা এবং সমতলে মিশে হয়ে যায় ঘিশ খোলায়। এই যেন এক রাজা বিহীন সবুজ দ্বীপ। আর দ্বীপের রাজা আমরা সবাই , সবার রাজত্বে।
এখনও এই জায়গার ছোঁয়া পর্যটক মহলে বা পর্যটন শিল্পে যুক্ত মানুষদের কাছে পৌঁছয়নি। গুটিকয়েক মানুষ আসতে শুরু করেছে আর উপভোগ করছে জলপ্রপাত থেকে নিয়ে সবুজায়নে ঘেরা এই ছোট দীপ কে। তারা ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট ও আপ্লুত এই রাজা বিহীন দীপ কে দেখে। গ্রামের গুটি কয়েক মানুষ কৃষি কাজ করে জীবন যাপন করেন। যার মধ্যে রয়েছে এলাচ , আদা ও শাক সবজি উৎপাদন। মালবাজার থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে এই গীতখোলা৷ ইচ্চে করলে নিজেরাই তাবু টাঙ্গিয়ে থাকতে পারবেন পর্যটকেরা। গ্রামের মানুষ পর্যটকদের সহযোগিতা করবে। এলাকার মানুষেরা প্রকৃতি কে অক্ষুন্ন রেখেছেন। বুক ভরা আসা নিয়ে রয়েছেন এলাকার মানুষ। আদৌ কি এই দীপ আগামী দিনে পর্যটনের বিচরণের স্থল হবে কি? সেটাই এখন দেখার।