উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ৪ঠা আগষ্ট ২০২১ : বুধবার : বিরল রোগে ভুগছিলেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। শিলিগুড়ি সহ বেশ কয়েক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও সুফল মেলেনি। চিকিৎসার খরচ জোগাতে হাতছাড়া হয়েছে পৈত্রিক জমিও। অবশেষে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪ ঘন্টার জটিল অস্ত্রপচার করে তাকে নতুন জীবন দিলেন শল্য চিকিৎসক সৌমেন মন্ডল। ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরতে চলেছেন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি রোডের উত্তর ডাঙাপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা পেশায় দিনমুজুর গদাধর রায়। খুশি রোগীর পরিজনরাও।
বিগত ১০-১২ বছর ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছেন গদাধরবাবু। চিকিৎসকরা টিউমার সন্দেহে চিকিৎসা চালালেও রোগের উপশম হয়নি। বাইরে চিকিৎসার খরচ জোগাতে বিক্রি করতে হয়েছে জমিও। অবশেষে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসে শল্য চিকিৎসক সৌমেন মন্ডলকে দেখান গদাধরবাবু। একাধিক পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি রাইট সাইডেড প্যারা ডুয়োডেনাল হার্নিয়ায় আক্রান্ত। হার্নিয়া সাধারণত শরীরের বাইরে হলেও গদাধর বাবুর ক্ষেত্রে তা ছিল শরীরের ভেতরে, ডানদিকে। ক্ষুদ্রান্তের সমস্ত অংশ দলা পাকিয়ে একটি থলের ভেতরে ছিল। এটি বিরল ঘটনা। গত ২৭শে জুলাই গদাধরবাবুর অস্ত্রপচার করেন চিকিৎসক সৌমেন মন্ডল। ঘন্টা চারেকের সফল অস্ত্রপচারের পরে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাকে। বর্তমানে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকায় তাকে ছুটি দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। এবিষয়ে চিকিৎসক সৌমেন মন্ডল বলেন, উত্তরবঙ্গে এধরণের অপারেশন সম্ভবত প্রথম। এ জাতীয় বিরল রোগের অস্ত্রপচার বড় জায়গাতেই হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নজির সৃষ্টি করলো বলে অভিমত খ্যাতনামা এই শল্য চিকিৎসকের। তিনি আরও বলেন, পেটে ব্যথা, অপুষ্টি, বমি সহ একাধিক উপসর্গ ছিল গদাধরবাবুর। অস্ত্রপচারের পর বর্তমানে তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। শল্য চিকিৎসক শৌভিক দেবনাথ, অ্যানাস্থেটিস্ট সুব্রত বর্মন, দুজন নার্স সহ ৫ জনের টিম এই অস্ত্রপচারে অংশ নেন। অস্ত্রপচার সফল হওয়ায় সকলেই খুশি।
গদাধর রায়ের স্ত্রী জোসনা রায় বলেন, বহু চিকিৎসককে দেখিয়েছিলাম। কোন লাভ হয়নি। অবশেষে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসে সুরাহা হল। স্বামীর সফল অস্ত্রপচারের জন্য চিকিৎসকদের ধন্যবাদও জানান তিনি।