27.1 C
New York
Tuesday, July 15, 2025

Buy now

spot_img

অবশেষে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন, বহরমপুরে চিকিৎসার ব্যবস্থা হল শেকল বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিমের।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৪ঠা আগষ্ট ২০২১ : বুধবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : খবরের জের, অবশেষে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন, বহরমপুরে চিকিৎসার ব্যবস্থা হল শেকল বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিমের, পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সব রকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস তৃণমূল নেতার জম্মু রহমানের। পাঁচ বছর ধরে শিকল বাঁধা অবস্থায় ছিল মানসিক রোগী। পয়সার অভাবে হচ্ছিল না চিকিৎসা। পাচ্ছিল না কোন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা। সেই খবর প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমে। তারপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

পাশে এসে দাঁড়ায় তৃণমূল নেতা এবং স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বাড়ির উঠোনের গাছ তলায় শিকল বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন বছর ১৯ এর সেলিম আকতার। এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী ছিল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের একবালপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামের হত দরিদ্র জাকির হোসেনের ছেলে সেলিম আকতার দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আর্থিক অনটনের কারণে অমিল চিকিৎসা। বাধ্য হয়ে পরিবার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে গাছ তলাতে বেঁধে রাখতেন শেকল দিয়ে। জাকির হোসেনের স্ত্রী ও বড় ছেলেও দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তারাও কোন রকম চিকিৎসা পায়নি শুধু আর্থিক অভাবের জেরে। এই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থেকেও সাহায্যের হাত বাড়ায় নি এলাকার জন-প্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা। ফলে চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছিলেন জাকির হোসেন ও তার পরিবার। অবশেষে সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনার কথা প্রকাশ হতেই নড়েচড়ে বসল জেলা প্রশাসন। তড়িঘড়ি প্রশাসনিক কর্তা থেকে শুরু করে জন প্রতিনিধিরা ভিড় জমাতে শুরু করে জাকির হোসেনের বাড়িতে। অবশেষে খবরের জেরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হলো জাকির হোসেনের পুত্র সেলিম আকতারকে। এদিন খবর প্রকাশের পর একবালপুর গ্রামে সেলিম আক্তারের বাড়িতে ছুটে যান হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিজয় গিরি। পাশাপাশি সেলিমকে দেখতে যান এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেনের ভাই তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান। তিনি পরিবারটিকে সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাশে থাকার বার্তা দেন। এ প্রসঙ্গে সেলিম আক্তারের বাবা জাকির হোসেন বলেন, সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতায় আজ আমার ছেলে ৫ বছর পর সুচিকিৎসা পেতে চলেছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আমরা আর্থিক অনটনের কারণে ছেলেকে চিকিৎসা করাতে পারেনি। শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমে খবরের পরে আমার ছেলে সুচিকিৎসা পেতে চলেছে। আমরা সংবাদমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞ।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সেলিমের চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়াতে খুশি ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একবালপুর গ্রাম। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের তৎপরতার জন্য এই ছেলেটি চিকিৎসার ব্যবস্থা লাভ করল। আগামী দিনে আমরা আশা করব সংবাদ মাধ্যম এই ভাবে স্থানীয় মানুষদের অভাব অভিযোগের পাশে দাঁড়াবে। এদিন সেলিমকে দেখতে যান এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেনের ভাই তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান। তিনি জানান সংবাদ মাধ্যমে আমরা সেলিমের এই খবরটি দেখতে পেয়ে যাতে ওর চিকিৎসার সুব্যবস্থা হয় তার প্রচেষ্টা শুরু হয়ে গেছে। আজকেই সরকারি খরচে ওকে প্রথমে মালদহ হাসপাতাল সেখান থেকে মালদা জেলা শাসকের অফিস এবং মালদা মেডিক্যাল কলেজে তার প্রাথমিক চিকিৎসা হওয়ার পরই বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।

সংবাদ মাধ্যম হল মানুষের কণ্ঠস্বর। যেখানে মানুষ অবহেলিত হবে সেখানে মানুষের আওয়াজ তুলে ধরবে সংবাদমাধ্যম। মানুষের জন্য আওয়াজ তুলবে সংবাদমাধ্যম। এ ক্ষেত্রেও তাই দেখা গেল। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই অসহায় যুবকের খবর প্রকাশিত হতে হতেই পাশে দাঁড়াল জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল পরিবারের লোকেরা।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!