উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৬ই আগষ্ট ২০২১ : শুক্রবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : স্নায়ু রোগে আক্রান্ত ৭ বছরের শিশু, নেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, অর্থাভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা, সাহায্যের কাতর আর্জি সরকারের কাছে, তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস বিডিওর।
জটিল স্নায়ু রোগে আক্রান্ত ৭ বছরের শিশু। কিন্তু অর্থাভাবে পাচ্ছে না চিকিৎসা। অসহায় পরিবারের কাতর আর্জি সরকারের কাছে। একরত্তি শিশু কেদেই চলেছে। উঠে দাঁড়ানোর ইচ্ছে থাকলেও শরীরে বল নেই। নিথর হয়ে পড়ে আছে বছর সাতেকের শিশু।পা ড়ার শিশুরা তাকে খেলতে নিয়ে যাওয়ার আশাই পাশে বসে রয়েছে। জানা যায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে স্নায়ু রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় শয্যাসায়ী মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙ্গনদীয়া গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র দিনমজুর হেদাতুল ইসলামের ছেলে মহম্মদ মুসাব্বির (৭)। টাকার অভাবে থমকে রয়েছে চিকিৎসা। চিকিৎসার অভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে শিশু। তাহলে কি চিকিৎসার অভাবেই বাবা মায়ের সামনে শিশুটি মারা যাবে? প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট থাকলেও মিলছে না ভাতা। হয়নি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডও। সরকারি সাহায্যের আশায় চেয়ে আছে পরিবার। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেস কটাক্ষ করেছে তৃণমূলকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে কার্ডের। শিশুটির মা আজমেরী বিবি জানান তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে, স্বামী দিনমজুর। মহম্মদ মুসাব্বির ছোট ছেলে।শিশুটি সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে জন্ম হলেও জন্মের একবছর পর ডায়েরিয়া হয়। এরপর থেকে শরীরে অসুখের বাসা বাঁধতে থাকে। শরীর ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যায়। হাত পা সরু হয়ে যায়। মাথা স্বাভাবিকের তুলনায় বড়ো হতে থাকে। সব সময় বিছানায় শয্যাসায়ী হয়ে থাকে। একা চলাফেরা করতে পারে না। মালদা ও কলকাতায় চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলেও টাকার অভাবে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা করাতে পারেনি। ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে যথেষ্ট টাকার প্রয়োজন। দিনমজুর স্বামীর পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। তাই সরকারি সাহায্যের আশায় চেয়ে আছে পরিবার। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ঘটনাটি জানতে পারলাম। খুব দুঃখজনক। আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা তড়িঘড়ি ব্যবস্থা করে দেব। শিশুটির দ্রুত আরোগ্য এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আব্দুস শোভান তীব্র কটাক্ষের সুর চড়িয়ে বলেন, তৃণমূলের আমলে যারা কাটমানি দিতে পারবে তাদেরই শুধু কাজ হবে। এই পরিবারটি গরিব দিতে পারেনি তাই কাজ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে এমনকি বড় বড় নেতা মন্ত্রীদের কার্ড আছে কিন্তু গরিব মানুষের নেই। এটাই এই সরকারের আমলে বাস্তব চিত্র। আমরা ঐ পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করব। পাল্টা তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা বিষয়টি শুনতে পেলাম। দুয়ারে সরকার প্রকল্প তে যারা আবেদন করেছে সকলে পেয়েছে। ওই পরিবারটি যদি না পেয়ে থাকে ব্যাপারটি দেখা হবে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর আমলে সকল রাজ্যবাসী এই সুবিধা পাচ্ছে। কংগ্রেসের প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, মিথ্যা সমালোচনা করাই এদের কাজ। কংগ্রেস নেতারা কার্ড না পেয়ে থাকলে আমরা কার্ড করে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করিয়ে দেব। তবে এই ধরনের ঘটনা হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় বারবার দেখা যাচ্ছে। গরিব পরিবারের মানুষেরা জটিল রোগে আক্রান্ত। কিন্তু তাদের থাকছে না স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। পয়সার অভাবে করাতে পারছে না চিকিৎসা। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রশাসনের উচিত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যাতে সমাজের সব স্তরের মানুষ পায় তার জন্য তৎপর হওয়া। আর এই অসহায় পরিবারের পাশে দ্রুত দাঁড়ানো উচিত।