উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১১ই আগষ্ট ২০২১ : বুধবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : ভাঙ্গনে গৃহহীন হাজার হাজার মানুষ। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানানোর শেষ সুযোগটুক ও গঙ্গার বিধ্বংসী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে দেখে শোকোস্তব্ধ গ্রাম। গঙ্গার ভাঙনের তলিয়ে গেছে একের পর এক গ্রাম। ভিটে মাটি সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজার হাজার পরিবার । আর এই গঙ্গার ভাঙন থেকে রেহায় পায়নি এলাকায় একমাত্র শতবর্ষ পুরনো মসজিদও। কলিয়াচকের বিরনগর এক পঞ্চায়েতের ভিমা টোলা এলাকার এই মসজিদ আজ বিপন্ন। চোখের সামনে প্রায় একশো বছর পুরোনো মসজিদকে তিল তিল করে গঙ্গায় তলিয়ে যেতে দেখে চোখে জল এলাকার ছোট থেকে বড় সকলের। বিরনগর পঞ্চায়েতের ভীমা টোলা, লালু টোলা চিনাবাজারের সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের একমাত্র উপাসনালয় ছিল ভিমা টোলার শতবর্ষ পুরোনো এই জামে মসজিদ। ঈদের দিনে এই মসজিদেই এলাকার কয়েক হাজার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা একত্রিত হয়ে নামাজ পরে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন একে অপরের সাথে। শুধু ঈদের দিনই নয় এই মসজিদে প্রতিদিনই এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আসতেন নামাজ পড়তে। কিন্তু বিগত কয়েক দিনের ভাঙনে তলিয়ে যেতে বসেছে এই মসজিদ। স্থানীয়রা মসজিদের জানালা, দরজা ইতিমধ্যেই খুলে নিয়েছেন।
এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যযে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানানোর শেষ সুযোগটুকুও গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যেতে দেখে শোকোস্তব্ধ গোটা গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দা সামেদ আলী, আইনুল হকরা জানান এই গঙ্গা ভাঙনে আমরা দিসে হারা। চোখের সামনে নিজের ভিটে মাটি সব তলিয়ে গেল এই গঙ্গায়। এই গ্রামেই আমাদের জন্ম। ছোট থেকে বড় হয়েছি এই গ্রামেই। কিন্তু এই গঙ্গা আজ সব কেড়ে নিলো। কত বন্ধু, আত্মীয় সব আজ আলাদা হয়ে গেলো। কে কোথায় গেলো কিছুই জানি না। সব হারালেও এলাকায় ছিল একটি বহু পুরোনো মসজিদ। কিন্তু আজ সেটাও গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যেতে দেখছি আমরা। আইনুল বাবু আরো বলেন, এক সময় এই জামে মসজিদে জায়গা হোতো না নামাজ পড়ার জন্য। কিন্তু আজ এই মসজিদে নামাজ পড়ার লোক নেই। এক মাত্র বহু পুরনো এই মসজিদকে গঙ্গায় তলিয়ে যেতে চোখের জল বাগ মানছে না কারোরই। স্থানীয় বিধায়িকা চন্দনা সরকার জানিয়েছেন এলাকার ভয়াবহ রূপ আমি নিজেই দেখে এসেছি। একের পর এক গ্রাম তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গা গর্ভে। ভিমা টোলা এলাকায় একটি মসজিদও গঙ্গায় কেটে যাচ্ছে। তিনি বলেন হিন্দুদের মন্দির নিয়ে যে ভাবাবেগ থাকে তেমনই মুসলিমদের মসজিদ নিয়ে থাকে। এই মসজিদ অন্যত্র বানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। এই মসজিদ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন স্থানীয় প্রাক্তন বিজেপির বিধায়ক সাধীন সরকারও।