উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১২ই আগষ্ট ২০২১ : বৃহস্পতিবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : কয়েকদিন আগে মোটর-সাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর জখম হয় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিতলিয়া গ্রামের ১৬ বছরের কিশোর দেবা দাস। গুরুতর আঘাত পায় মাথায়। তারপর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী দেবা। কথা বলতে পারেনা, চলতে-ফিরতে সাহায্য নিতে হয় অন্য কারোর। দুর্ঘটনার পরে প্রথমে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল তারপরে মালদা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করা হয়। সেখান থেকে দেবাকে নিয়ে যায় শিলিগুড়ি সরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা পরিবারকে জানিয়ে দেন অবিলম্বে মাথার অপারেশন না করলে অবস্থা আরও অবনতি হবে। কিন্তু দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের ছেলে দেবা দাসের চিকিৎসা নিয়ে গভীর সংকটে পড়েছেন তার দরিদ্র অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা। এখনও পর্যন্ত জোটেনি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। ছেলের মাথার অপারেশন করতে খরচ হবে লক্ষাধিক টাকা। পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে কিছু টাকার সাহায্য মিলেছে কিন্তু তা অপ্রতুল। এখন এই অবস্থায় বৃদ্ধ বাবা-মা কিভাবে তাদের ছেলের চিকিৎসা করাবেন এই চিন্তায় আকুল তারা। সরকারি দরজায় ঘুরেও জোটেনি কোন আর্থিক সাহায্য। তাই বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছেলেকে বাঁচানোর আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন দেবা দাসের বৃদ্ধ বাবা-মা। যদিও তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করা হবে পাশাপাশি সব রকম ভাবে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন চাঁচল মহকুমা শাসক। অন্যদিকে সব রকম ভাবে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
দেব দাসের বৃদ্ধ বাবা সুদাম দাস জানালেন, আমি দিনমজুর। জমিতে মজুরি করে তবে সংসার চালাই। আমার দুই ছেলে। ছোট ছেলে সম্প্রতি বাইক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে মাথায় চোট পেয়ে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কথাবার্তা বলতে পারেনা চলতে ফিরতে পারে না। আমরা ছেলেকে নিয়ে মালদা সরকারি হাসপাতাল শিলিগুড়িতে ও চিকিৎসা করালাম কিন্তু চিকিৎসকরা বলছে মাথার অপারেশন করাতে হবে যার ব্যয় প্রায় লক্ষাধিক টাকার ওপরে। অত টাকা কোথায় পাব। ছেলে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরখাস্ত করলাম যাতে ছেলেকে বাঁচাতে উনি এগিয়ে আসেন।
দেবা দাসের মা চম্পা দাস কাঁদতে কাঁদতে জানান মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট এর পরই ছেলে মাথায় চোট পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে কোন লাভ হয়নি। অনেকের কাছেই দরজায় দরজায় ঘুরে সাহায্য চেয়েছিলাম। কেউ চাল কেউ কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তা দিয়ে কি চিকিৎসা হয়। ছেলেটা চোখের সামনে ছটফট করছে রাত্রে ঘুম হয় না। কি করবো কিছুই বুঝছি না। তাই শেষ চেষ্টা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি যদি ছেলেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা যায়।
এদিকে পরিবারটির অসহায়তার কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান। তিনি জানান আমি ছেলেটি চিকিৎসার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিডিও সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। যাতে অবিলম্বে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যবস্থা করা যায় তারও চেষ্টা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চাঁচল মহকুমা শাসক কল্লোল রায় জানান ঘটনার কথা শুনেছি। আমি ব্লক প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে বিশদ জানতে চাইবো। তার সঙ্গে যেহেতু স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ব্যাপার আছে জেলা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে আমরা সমস্ত টাই জানাবো। যাতে ছেলেটির অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় সেই প্রচেষ্টা করা হবে।