উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : নাগরাকাটা : ২৪ শে আগষ্ট ২০২১ : মঙ্গলবার : পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেসের একার পক্ষেই বোর্ড গঠনের পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল বটে। তবে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিস্তর টানাপোড়েনের পর যে বোর্ড গঠিত হয় তাতে বিজেপির ছায়া ছিল স্পষ্ট। এবারে শাসক দলের নাগরাকাটা ব্লক কমিটির সভাপতি পদে সঞ্জয় কুজুর আসীন হওয়ার সাথে সাথে লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড থেকে বিজেপির সংস্পর্শ এড়ানোর পদক্ষেপ করলেন। মঙ্গলবার এই ইস্যুতে নাগরাকাটায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল এর সমস্ত সদস্যরা ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ঠিক হয়েছে পঞ্চায়েতের দুটি উপ সমিতিতে বিজেপির হয়ে জেতা যে দুজন সঞ্চালক পদে রয়েছেন তাঁদের সরিয়ে তৃণমূলের নিজস্ব পঞ্চায়েত সদস্যদের বসানো হবে। দলের নয়া ব্লক সভাপতি বলেন, আগে কি হয়েছে জানা নেই। তবে লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ডে থাকা বিজেপির ছায়া কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত। যেহেতু আমাদের সেখানে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে সে কারণে দ্রুত বিজেপির টিকিটে জেতা দুজন সঞ্চালককে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যা যা পদক্ষেপ করার করা হবে। প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে মোট ২৬ সদস্য বিশিষ্ট লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল একাই ১৭ টি আসনে জয়ী হয়। বিজেপির ঝুলিতে যায় ৫ টি আসন। ৩ টি আসন পায় সিপিএম। ১ টিতে নির্দল প্রার্থী জয় লাভ করে। পরে ওই নির্দল প্রার্থীও তৃণমূলকে সমর্থন করে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও প্রধান, উপপ্রধান পদ কে কেন্দ্র করে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়। ৬ বার বোর্ড গঠনের সভা ডেকেও প্রশাসনকে তা বাতিল করতে হয়। প্রায় ১ বছর পর বোর্ড গঠিত হলেও সেদিনের সভাও ছিল নানা ক্লাইম্যাক্স ও টানাপোড়েনে মোড়া। গোষ্ঠী দ্বন্দের জেরে বিজেপির দুজন কে সঞ্চালক পদে বসানো হয়। যা নিয়ে গত ৩ বছর ধরে তৃণমূলের দুটি লবির রেষারেষি লেগেই ছিল। মঙ্গলবারের বৈঠকে তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ডের প্রধান ও উপপ্রধান পদে যারা আছেন তাঁরাই থাকবেন। বর্তমানে সেখানে প্রধান পদে রয়েছেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মনোজ মুন্ডা।
তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। আগে যা হবার হয়েছে। বিজেপির সংস্পর্শ রাখা সম্ভব নয়। নতুনভাবে পথ চলা শুরু হবে। বিজেপির যে দুজন পঞ্চায়েত সদস্য সেখানে সঞ্চালক পদে রয়েছেন তাঁরা হলেন অনুপ মাঝি ও সীতা মাঝি। এ-র রমধ্যে অনুপ জন সাস্থ্য এবং সীতা নারী ও শিশু কল্যাণ সমিতির সঞ্চালক পদে রয়েছেন।ওই দুজনকে সরিয়ে তৃণমূল কাকে বসাবে তা অবশ্য এদিন জানায় নি। সেটা দ্রুত ঠিক করা হবে বলে ব্লক সভাপতি জানিয়েছে। এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক অসিতাভ বসু, নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফিরোজ নুর পাটোয়ারী,জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গণেশ ওরাওঁ, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি গোবিন লামা, ব্লক তৃণমূলের সম্পাদক আজাদ আনসারি প্রমুখ।