উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ২১ শে অক্টোবর ২০২১ : বৃহস্পতিবার : ময়নাগুড়ি শহীদগড় এলাকার বাসিন্দা বিভাস গুহ পেশায় একজন ব্যবসায়ী, তার ছেলে ময়ুখ গুহ জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। গত দু বছর ধরে তার ছেলে মোবাইল গেমের প্রতি প্রচন্ড আসক্ত হয়ে পড়ে। রামি, পাবজি সহ বিভিন্ন মোবাইল গেমের আসক্তির কারণে রাতের পর রাত জেগে মোবাইল গেম খেলার অভ্যাস তৈরি হয় তার। এরপর পরিবারের সবাই একসাথে সিদ্ধান্ত নিয়ে মোবাইল ফোনের আসক্তি কাটাতে ময়ুখকে গত জুলাই মাসে জলপাইগুড়ি পান্ডা পাড়া এলাকার একটি রি-হ্যাব সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই গত ৩ মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিল ময়ুখর
বৃহস্পতিবার ময়ুখকে শীতের পোশাক দিতে হোমে যাবার কথা ছিল তার মা রুমকি গুহর। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে ময়ুখের পরিবারের কাছে ফোন আসে তাদের ছেলে অসুস্থ। প্রথমে তারা শুনতে পান তাকে জলপাইগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোম ভর্তি করা হয়েছে পরে জানতে পারেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ভর্তি না নেওয়ায় তাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর শুনে পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাদের ছেলে মারা গেছে। খবর শুনে কান্নার ভেঙে পড়ে পরিবার। ঘটনায় হোম কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে এমন দাবী করে পরিবার। পাশাপাশি হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে হোম কর্তৃপক্ষের দাবী। বৃহস্পতিবার সকালে সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করে ময়ুখ। এরপর সকলের সাথে ক্লাসও করে ময়ুখ। আচমকাই তার পেট ব্যাথা শুরু হয়। বেশ কয়েকবার শৌচাগারে যায় ময়ুখ। এরপর হোম কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সাথে ভিডিও কলিং করে পরিস্থিতি দেখায়। চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌছয় পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সুত্রে আরও জানা গেছে, হাসপাতাল সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতার জন্য বৃহপতিবার ময়নাতদন্ত হয়নি। শুক্রবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। পরিবারের আত্মীয় সুজয় চন্দ জানায়, মৃত ময়ুখের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, হয় তো রি-হ্যাব সেন্টারে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়ে থাকতে পারে। আমরা চাই প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি প্রদান করুক।