উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ৩ রা নভেম্বর ২০২১ : বুধবার : টানা ছয় বছরের অচলাবস্থা কাটিয়ে নতুন মালিকানার হাত ধরে চলা শুরু হলো ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের ডানকান গোষ্ঠীর দুই চা বাগান। দীপাবলির আগে খুশির হাওয়া বয়ে গেল নাগেশ্বরী ও কিলকোট চাবাগানের প্রায় ৩৫০০ শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। ডুয়ার্সের চা শিল্পের ইতিহাসে ডানকান গোষ্ঠী ছিল অন্যতম নাম। ডুয়ার্সের এই গোষ্ঠীর চাবাগান গুলির চা উৎপাদক হিসাবে সুনাম ছিল। শ্রমিকরাও তাদের পাওনা নিয়ম মতো পেত। ২০১৫ সাল নাগাদ এই গোষ্ঠীর পরিচালকরা কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যায় পড়ে যাবার কারনে, প্রভাব এসে পড়ে চাবাগান গুলিতে। ক্রমশ রুগ্নতা গ্রাস করতে থাকে চা বাগানে। বেতন মজুরি, প্রবিডেন্টফান্ডে টাকা জমা সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। কখনও খোলা, আবার কখনো বন্ধ, এভাবেই চলছিল গত ছয় বছর ধরে। অভাব অনটনে শ্রমিকদের প্রায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। শ্রমিকরা বার বার মালিকানা বদলের দাবী করে চলছিল।
অবশেষে মঙ্গলবার এক চুক্তির মাধ্যমে এই দুই চাবাগান পরিচালনার ভার পায় সন্মেলন টি এন্ড বেভারেজ কোম্পানি। চুক্তি অনুযায়ী নতুন এই কোম্পানি বুধবার দুটি চাবাগানের দায়িত্ব নিয়ে বাগান খুলে দেয়। বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ নাগেশ্বরী চাবাগানে শ্রমিকদের উচ্ছাসের মধ্যে দিয়ে ফিতা কেটে চাবাগান খুলে দেন নতুন মালিকানার কর্নধার সন্মেলন বক্সি। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা, শ্রমিক নেতা মুনিকুমার ডার্নেল, পুলিন গোলদার, জোশেফ মুন্ডা সহ অন্যান্যরা।
উদ্বোধন করে সম্মেলন বক্সি বলেন, এই দুটি চাবাগানের শ্রমিকরা নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলছিল। আমরা চাই শ্রমিকরা কাজ করুক হাসিখুশি থাকুক। আমরা ভালোভাবে এই দুটি চাবাগান চালাতে চেষ্টা করে যাব। আগের মালিকানার কাছে শ্রমিকদের যে বকেয়া ছিল। সেই বকেয়ার ৬৫% চারটি কিস্তিতে দিয়ে দেব, একটি কিস্তি আজই দেওয়া হবে। বড়দিনের আগে দ্বিতীয় কিস্তি, দোলের আগে তৃতীয় কিস্তি ও মে মাসে চতুর্থ কিস্তি দেওয়া হবে। কারখানাও খুলে চাবাগানের অবস্থা স্বাভাবিক করব।
উল্লেখ্য, এই কোম্পানি ইতিমধ্যে মাল মহকুমা এলাকার অচল মানাবাড়ি ও বাগরাকোট চা বাগানের দ্বায়িত্ব হাতে নিয়ে সচল করে তুলেছে। শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হাওয়া তৈরি হয়েছে। নাগেশ্বরী চাবাগানের কমলা ছেত্রী, প্রমিলা উরাও জানান, আমরা অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে ছয় বছর পার করেছি। এখন বাগানের অবস্থা স্বাভাবিক হবে। তাতেই আনন্দ লাগছে।