উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ৬ই নভেম্বর ২০২১ : শনিবার : শনিবার ছিল এদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রচলিত পারিবারিক আনন্দোৎসব ভাইফোঁটা বা ভাইটিকা। এদেশের প্রচলিত পৌরাণিক মত অনুযায়ী জানা যায়, এই দিনে মৃত্যুর দেবতা যমকে ফোঁটা দিয়ে তার বোন যমুনা বর প্রার্থনা করেছিলেন। এই দিনে বোনেরা ভাইকে কপালে কাজল, চন্দন ও ঘৃতের ফোটা দিলে ভাইকে যেন যমের দুয়ার দেখতে হবে না। সেই থেকে দেশে সকল বোনেরা কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বোনেরা ভাইকে ফোটা দিয়ে দীর্ঘ জীবন কামনা করে। করোনা অতিমারি আমাদের সমাজে অনেকে জীবনে এই কামনা থামিয়ে দিয়েছে। অতিমারির কবলে কেউ হারিয়েছে বোনকে আবার কেউ হারিয়েছে ভাইকে। সেই সব বাড়িতে এবার ভাইফোঁটার আনন্দোৎসব নেই। রয়েছে এক ভারাক্রান্ত পরিবেশ। আশেপাশের বাড়িতে যখন শাঁখ বাজছে, চলছে উৎসবের আনন্দ, তখন এই বাড়িগুলিতে অন্য চিত্র দেখা গেল।
মালবাজার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজী কলোনীর বাসিন্দা দীপঙ্কর ঘোষ জানালেন, গত এপ্রিল মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে শহরে। সেই সময় তার বোন সংক্রামিত হয়। পরে নেগেটিভ হলেও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মারা যায়। এই জন্য তাদের বাড়ির সবার মন ভারাক্রান্ত। কোন মাঙ্গলিক বা আনন্দোৎসব হচ্ছেনা।
শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কলোনির গৃহবধূ শ্রাবণী চ্যাটার্জি জানালেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ছোবলে তিনি হারিয়েছেন দাদাকে। ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান তার জীবন থেকে মুছে গেছে। ভাইয়ের বাড়িতে দুর্গাপূজা হোতো। সেই অনুষ্ঠান এবার হয়নি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাড়িতেই আছেন। এই রকম ভাবে মালবাজার, চালসা, ওদলাবাড়ি সহ ডুয়ার্সের বেশ কিছু পরিবার আছে যাদের বাড়িতে এবার ভাইফোঁটা হচ্ছেনা। শুধু ভাইফোঁটা নয়, অন্যান্য মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানও নেই তাদের বাড়িতে।