উত্তরবঙ্গ নিউজ : ময়নাগুড়ি : ১ লা ডিসেম্বর ২০২১ : বুধবার : ( রঞ্জন সাহা, সংবাদ দাতা ) : এখনও সকলের বাড়িতে ওয়াটার পিউরিফায়ার মেশিন নেই। তাই পরিস্রুত পানীয় জল পেতে স্থানীয় পানীয় জল তৈরির ইউনিটের উপর ভরসা করেন অনেকেই। পাড়ায় পাড়ায় জার বা ২০ লিটারের ড্রামে করে পরিস্রুত পানীয় জল অল্প দামে কিনে নেওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ময়নাগুড়ির শহরতলির অনেক জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বোতল-বন্দি পানীয় জল তৈরির ইউনিটগুলির অধিকাংশেরই লাইসেন্স নেই। জলের গুণমান বিচার করারও কোনও ব্যবস্থা নেই। সম্পূর্ণ সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের উপরেই ভড় করে গজিয়ে উঠছে স্বল্প বিনিয়োগে চড়া মুনাফার জলের ব্যবসা।
অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ময়নাগুড়ি শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাল ফুট সেফটি দপ্তরের আধিকারিকরা। এদিন ময়নাগুড়ির শহরের পানীয় জল ব্যবসায়ী ফ্যাক্টারিতে অভিযান চালায় তারা। এরপর ময়নাগুড়ির রোড এলাকার আর একটি দোকানে তারা অভিযান চালায়। একদিনের পানীয় জল নিয়ে এই বেআইনী কারবারে রীতিমতো উদ্বিগ্ন তাঁরা। একই সঙ্গে চিন্তা বেড়েছে প্রশাসনেরও। কারণ এই অবৈধ, অপরীক্ষিত পানীয় জলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শহর ও শহরতলির হাজার হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটিও। নিয়ম হল বোতল-বন্দি পানীয় জলের ইউনিট খুলতে হলে সঙ্গে ল্যাবরেটরি থাকা বাধ্যতামূলক। সেখানে নিয়মিত জলের মান পরীক্ষা করার কথা। জলে আর্সেনিক বা অন্য কোনও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া আছে কিনা, জলে খারের মাত্রা কত, আয়রনের মাত্র কত তা নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার। এই ধরনের পানীয় জল তৈরির প্লান্টে ওজোন ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থাও থাকা বাধ্যতামূলক। নিয়ম অনুযায়ী, পরিস্রুত পানীয় জল তৈরির ক্ষেত্রে অপরিশোধিত জলের ৭০ শতাংশ ব্যবহার করা যায়, বাকি ৩০ শতাংশ ফেলা যায়। কিন্তু ময়নাগুড়ি শহরের গজিয়ে ওঠা এই সব পানীয় জল তৈরির প্লান্টে জল পরিস্রুত করার তেমন কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না। কোনও মতে ক্লোরিন মিশিয়ে জল পরিস্রুত করে অর্ডার অনুযায়ী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি বাড়ি।
এদিন জলপাইগুড়িতে বালাপাড়া সহ জলপাইগুড়ি বিভিন্ন জায়গাতেও এই ধরনের অভিযান চলে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জলের নমুনায় সংগতি ধরা পড়ে সেই সঙ্গে জলের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানা যায়।