উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালবাজার : ৮ই ডিসেম্বর ২০২১ : বুধবার : একবছরের মধ্যে প্রায় সব সমস্যা কাটিয়ে সচল স্বাভাবিক উত্তরনের পথে এগিয়ে চলছে ডুয়ার্সের মাল ব্লকের মানাবাড়ি চাবাগান।
সময়টা ২০১৬ সালের অক্টোবর মাস। বোনাস নিয়ে চাবাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠন গুলির টানাপোড়েনের মাঝে হঠাৎ চাবাগান কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যায়। প্রায় ১০০০ শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অথৈজলে পড়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় কারখানার সাইরেন। থেমে যায় স্বাভাবিক মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা। পেটের তাগিদে সংসার চালাতে অনেকেই নদীর পাথর বালি চালনির কাজে যোগ দেয়। কেউ কেউ পাড়ি জমায় ভিন্ন রাজ্যে। অভাব অনটনকে সঙ্গী করে জীবন সংগ্রামের লড়াইতে নামে চাবাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা। চাবাগানের পরিবেশ স্বাভাবিক করার দাবী জানিয়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন মহলে আবেদন নিবেদন শুরু করে। দাবি ওঠে মালিকানা পরিবর্তনের। অবশেষে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রায় ৬ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে ২০২০ সালের ৭ই ডিসেম্বর সন্মেলন টি এন্ড বেভারেজ নামের এক নতুন কোম্পানি চা বাগানের পরিচালনার কাজ শুরু করে। রীতিমতো পুজো দিয়ে নতুন ভাবে চাবাগানের চলা শুরু হয়। শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তির দিন ফিরে আসে। গত এক বছর শ্রমিকদের মজুরি সময় মতো হয়েছে। প্রবিডেন্ট ফান্ডের টাকা নিয়মিত জমা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সাবেক কোম্পানির আমলে পি এফে যা বকেয় ছিল তাও নতুন কোম্পানি জমা করতে শুরু করেছে। চাবাগানের শ্রমিক রমেশ কুর্মি জানালেন, নতুন কোম্পানি ভালো ভাবে বাগান চালাচ্ছে। গত এক বছরে কখনো মজুরি অনিমিত হয়নি। পিএফ নিয়মিত জমা হচ্ছে। আগের মালিকের আমলে যে বকেয়া ছিল তাও মিটিয়ে দিচ্ছে। আমরা খুশি।
চাবাগানের ম্যানেজার রাজীব চক্রবর্তী জানান, গত একবছর ধরে বেতন মজুরি নিয়মিত দেওয়া হয়েছে। পিএফ নিয়মিত করা হয়েছে। পুরানো বকেয়াও মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চাবাগানে বিদ্যুৎ ছিল না। সব মিটিয়ে আজ বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার কাজ শুরু করা হয়েছে। জরাজীর্ণ কারখানা নবীকরনের জন্য প্লান হয়ে গেছে। সত্বর কাজ শুরু হবে। নতুন করে প্লান্টেশনের কাজও কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে। এখন চাগাছ কলমের কাজ চলছে। আমরা চাইছি চাবাগানে ভালো দিন ফিরে আসুক। দেখা গেছে এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে নতুন মালিকানার অধীনে এক অচল চাবাগান ক্রমাগত উত্তরনের দিকে এগিয়ে চলছে। উল্লেখ্য, নতুন এই কোম্পানি ডুয়ার্সে আরও কয়েকটি রুগ্ন চাবাগানের পরিচালনার ভার নিয়েছে। সবাই চাইছে এই চাবাগান গুলিতে সুদিন ফিরে আসুক।