উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালবাজার : ১৯ শে ডিসেম্বর ২০২১ : রবিবার : ২৪ শে নভেম্বর থেকে ভাল্লুকের আতংক এখন সারা ডুয়ার্সে। মালবাজার মহকুমার মেটেলি চা বাগানে ভাল্লুকের আক্রমনে এক যুবকের নিহত হওয়ার পর থেকে এই আতংকের রেশ এখন চারিদিকে।
ইতিমধ্যে মালবাজার, নাগ্রাকাটা ও আলিপুরদুয়ার জেলার মাঝেরডাবরী থেকে তিন ভালুককে ঘুমপাড়ানী গুলি দ্বারা বেহুশ করে জঙলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু সমতল নয় পাহাড়ী এলাকায় ভালুকের আতংক দেখা দেওয়ায় সাধারন মানুষের সাথে বনদপ্তর চিন্তিত। কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকে মিশনহিল এলাকায় ভালুকের হানা হয়েছে বলে দাবী স্থানীয় মানুষের দাবী। ব্যাপক শস্যহানী হয়েছে। কালিম্পং জেলার লাভা এলাকায় গাছের আকাপডো ফল খেতে ভাল্লুককে দেখা গেছে বলে ঐ এলাকার মানুষের বক্তব্য। তিন দিন আগে মেটেলীব্লকের জুরন্তী চা বাগানের ১৬ নম্বর চৌপলে ভাল্লুক দেখতে পায় চা বাগানে পাতা তুলতে যাওয়া শ্রমিকরা। কিছুক্ষন পরে চলে যায়। পরে বনদপ্তর এসে খোজাখুজি করে ভাল্লুকের সন্ধান পায় নি। এইভাবে ভাল্লুক সমতলে বা জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে আসায় মানুষের মনে আতংক বেড়েছে। লোয়ার হিমালয়ান রেঞ্জ এলাকায় বসবাসকারী ব্লাক ভাল্লুকের সমতলে আগমনের কারণ কি? কোথা থেকে কেন সমতলে বাস করতে চায় ভাল্লুক তা এখনও বনদপ্তরের অজানা। এই ভাল্লুকের আক্রমনে মেটেলী চা বাগানে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আবার সেই ভাল্লুক কে পিটিয়ে মেরেছে উত্তেজিত জনতা। মালবাজার ওয়াল্ড লাইফের রেঞ্জার দীপেন সুব্বা বলেন, ভাল্লুক এই ভাবে সমতলে বা জঙ্গল থেকে লোকালয়ে আসা খুব কম দেখেছেন। এব্যাপারে আমাদের আরও গভীর ভাবে চিন্তা করতে হবে। জনগনের দাবী অবিলম্বে ভাল্লুকের আক্রমন থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এব্যাপারে মালবাজারের পরিবেশ প্রেমী স্বরুপ মিত্র বলেন, দুটি কারনে ভাল্লুক জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে। প্রথমতঃ পাহাড়ি এলাকায় মাইনিং হচ্ছে। জঙ্গল এলাকায় পাথর ভাঙ্গার মেশিন বসেছে। রাস্তা তৈরির জন্য চলছে গাছ কাটার হিরিক। পাশ্ববর্তী ভুটান এলাকায় প্রতিনিয়ত মাইনিং এর বিকট শব্দ, ভাল্লুকসহ বন্য জন্তুদের সমস্যা তৈরি করেছে। দ্বিতীয়ঃ পাহাড়ি এলাকায় ভাল্লুকের খাবারের সমস্যা বেড়েছে। এবছর পাহাড়ি এলাকায় সে রকম কমলা হয় নি। সেই কারনে জঙ্গল এলাকায় মধুও কম হয়েছে। আর ভাল্লুকের ভাল খাদ্য মধু। কিন্তু পর্যাপ্ত মধু জঙ্গলে না থাকায় খাবারের খোজে পাহাড়ের ভাল্লুক সমতলে আসছে। তাছাড়া এই শীতের সময় পাহাড়ে ঠান্ডায় শীত ঘুমে থাকে ভাল্লুক কিন্তু ভাল্লুক শীত ঘুমে না থেকে সমতলে চলে আসছে। তারঘেরা বন দপ্তরের রেঞ্জার কুনাল বর্মন বলেন, এই প্রথম সমতলে চলে আসছে ভাল্লুক। সেই জন্য আমরা সমস্ত বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখছি। এব্যাপারে আমরা সাধারন মানুষকে সচেতন করছি।
