উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ১৮ই জানুয়ারী ২০২২ : মঙ্গলবার : ময়নাগুড়ির দক্ষিণ মৌয়ামারী দোমহনি এলাকার ট্রেন দূর্ঘটনাগ্রস্থ এলাকায় উপচে পড়লো লোকজনদের ভিড়। ভিড়ের সুযোগে রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় রকমারি খাবারের দোকান নিয়ে হাজির হলো ব্যবসায়ীরা।
জলপাইগুড়ি, মালবাজার সহ ময়নাগুড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবার সহ দূর্ঘটনাগ্রস্থ রেল দেখতে উৎসাহী লোকজনদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা গেলো। খাবারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ভালো হল। অনেকেই বললেন, দূর্ঘটনাগ্রস্থ এলাকা যেন পর্যটন কেন্দ্রের রুপ ধারণ করেছে। অনেকেই আবার বললেন, কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। দেখলে মনে হবে যেন কোন পর্যটন কেন্দ্র। বাচ্চাদের নিয়ে, বাড়ির বয়স্ক বাবা-মা ও স্ত্রীকে নিয়ে ছুটির আমেজ কাটাতে প্রচুর সংখ্যক লোকজন এলো দক্ষিণ মৌয়ামারী গ্রামে। তবে কোন পিকনিক করতে নয়। তাঁরা এসেছেন দূর্ঘটনাগ্রস্থ রেল দেখতে। কেউ এসেছেন নিজের গাড়ি নিয়ে কেউ বা গাড়ি ভাড়া নিয়ে এসেছেন ঘটনাস্থলে। অনেকেই আবার এসেছেন টোটো রিজার্ভ করে। প্রচুর মানুষের ভিড়ে যদি ভালো ব্যবসা করা যায়, সেই সুযোগের সদ ব্যবহারে হাজির এলাকার লোকজন সহ ময়নাগুড়ির বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু ব্যবসায়ী। বেলুনের দোকান থেকে শুরু করে ফুচকার দোকান, রুটি সবজির দোকান, আইস্ক্রিমের দোকান, চায়ের দোকান নিয়ে হাজির অনেকেই। তাঁরা জানিয়েছে, ব্যবসা সারাদিন ভালোই হয়েছে। বাইরে থেকে আসা লোকজনেরা বলেন, একদিকে ঘোরাও হলো অপর দিকে খাওয়া দাওয়াও হল।
জলপাইগুড়ি থেকে আসা সমীর ঘোষ, ডালিয়া ঘোষ বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে এসেছি দূর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেন দেখতে। একটু ভয় লাগছে ঠিকই, তবে এত বড় ট্রেন দূর্ঘটনা তো আগে দেখি নি, সেটাই দেখতে এসেছি। বাড়ির সকলে মিলে ফুচকা খেয়েছি। আশীষ রায়, বিদ্যুৎ দাস বলেন, আমরা জলপাইগুড়ি থেকে এসেছি। এই ট্রেন দেখতে এসেছি, এমন দৃশ্য আগে দেখি নি। মালবাজারের বাসিন্দা মুস্তফা প্রধান বলেন, আমার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে এসেছি। এখানে অনেক লোকের ভিড়ে গ্রামের পরিবেশ পালটে গিয়েছে। খাবারের দোকান থেকে খাবার খেয়েছি। দূর্ঘটনা কোন মতেই কাম্য নয়। তবে এক অন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে রইলাম। এলাকার বাসিন্দা কমল চন্দ্র রায় বলেন, আমি রুটি-সবজির দোকান নিয়ে বসেছি। পুলিস থেকে শুরু করে রেল লাইনের কাজে থাকা লোকজন আসছে খেয়ে যাচ্ছে। বাইরের লোকেরাও আসছে সকাল থেকে। তাঁরাও দোকানে এসে রুটি খাচ্ছে চা খাচ্ছে, আমাদেরও ব্যবসা চলছে। ময়নাগুড়ি শহরের হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা রতন সরকার বলেন, আমি আইসক্রিম ও বেলুন বিক্রয় করছি। ময়নাগুড়ি শহরের বিভিন্ন স্কুলের সামনে দোকান করতাম, লক ডাউনে সব বন্ধ, রোজগার তেমন ভাবে নেই। এখানে এসে দুটি পয়সার মুখ দেখতে পেয়েছি। তবে আমরাও চাইছি এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।