উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৮ শে জানুয়ারী ২০২২ : শুক্রবার : গত ২৫ শে জানুয়ারী আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলো ১৬ বছরের গিন্নি বিশ্বকর্মা। ২৫ তারিখ রাতে বিয়ে বাড়ি থেকেই নিখোজ হয় যায় দশম ক্লাসের ছাত্রী গিন্নি। তারপর বহু খোজাখুজি করেও গিন্নি বিশ্বকর্মার কোনো খোঁজ পায়নি পরিবার। অবশেষে ২৭ তারিখ দুপুরে পরিবার জানতে পারে, ২৬ জানুয়ারী ওদলাবাড়ি রেল লাইনের কাছ থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। পরে জানা যায় সেই মৃতদেহ গিন্নি বিশ্বকর্মার। তবে পরিবারের অভিযোগ গিন্নিকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের তীর মাল ব্লকের ওদলাবাড়ির হঠাৎ কলোনীর কিশোর রাহুল রায়(১৭) এর বিরুদ্ধে। অন্য দিকে মৃতদেহ শুক্রবার ময়নাতদন্ত হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। মালবাজার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
মৃত কিশোরী গিন্নি বিশ্বকর্মার জ্যাঠা রতন বিশ্বকর্মা জানিয়েছেন, গিন্নি বিশ্বকর্মা বাড়ি ওদলাবাড়ির মানাবাড়ি চা বাগানের ৯ নম্বর লাইনে। মানাবাড়ি ১৪ নম্বর সেকশনে আমার আর এক ভাই এর মেয়ের বিয়ে ছিলো ২৫ জানুয়ারী। সেই বিয়েতেই গিয়েছিলাম আমরা সবাই। রাতে সবাই বাড়ি ফিরে আসি। গিন্নি বিয়ে বাড়িতেই ছিলো। ২৬ তারিখ থেকে গিন্নির কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বহু জায়গায় খোজাখুজি করি। ২৭ জানুয়ারী জানতে পারি, ২৬ জানুয়ারীতে ওদলাবাড়ি রেলের আন্ডার পাসের কাছে ট্রেনের ধাক্কায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর মালবাজার রেল পুলিশের কাছে গিয়ে জানতে পারি মৃতদেহটি কিশোরী গিন্নি বিশ্বকর্মার। এর পর অভিযোগ করা হয় এটা খুন। এই খুনের পেছনে রয়েছে ওদলাবাড়ি হঠাৎ কলোনীর কিশোর রাহুল রায়। কারন বিয়েবাড়িতে রাহুলও এসেছিলো। রাহুলের সাথে ফোনে কথাবার্তা হতো। তা ছাড়া রাহুলের বাড়ির সামনেই গিন্নির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত গিন্নি-র কাকাতো দিদি শিখা বিশ্বকর্মা বলেন, বিয়েতে রাহুলের নিমন্ত্রন ছিলো। বিয়ে বাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি চলে যায় রাহুল। আমরা ভেবেছিলাম বোন গিন্নি রাতে নিজের বাড়ি চলে গেছে। তাই রাতে খোজাখুজি করি নাই। সকালে জানতে পারি বোন বাড়ি যায়নি। তারপর খোঁজাখুজি শুরু করি। আমাদের সন্দেহ, বোনের মৃত্যুর পেছনে রাহুল রায়ের হাত থাকতে পারে। সেই জন্য মালবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। বর্তমানে রাহুল বাড়িতে নেই। এব্যাপারে রাহুলের মা মিনতি রায় বলেন, আমার ছেলে রাহুল একদম ছোট। ও এই কাজ করতেই পারে না। পুলিশের ভয়ে ছেলে অন্য জায়গায় আছে। আমি পরে জানতে পারি দুজনের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা ছিলো। তবে আগে জানতাম না। মেয়েটি সুসাইট করতে পারে কিন্তু আমার ছেলে কোন মতেই খুন করেনি। পুলিশ ঠিকঠাক তদন্ত করলেই বুঝতে পারবে আমার ছেলে নির্দোষ।
এদিকে শুক্রবার গিন্নি বিশ্বকর্মার মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর বিকেলে মানাবাড়ি চাবাগানে নিয়ে আসা হয়। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।