উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১২ই ফেব্রুয়ারী ২০২২ : শনিবার : আম রপ্তানির ক্ষেত্রে কিষান রেল চালানোর জন্য পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে একলাখী স্টেশন অথবা অন্য কোন স্টেশন থেকে কিষান রেল চালানো যেতে পারে। কিষান রেলে পণ্য পরিবহন করলে ৫০ শতাংশ সাবসিডি পাবেন আম চাষিরা। এদিন একলাখী জংশন পরিদর্শনে এসে এই কথাই জানালেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার অংশুল গুপ্তা। জেনারেল ম্যানেজারের সাথে পরিদর্শক দলে ছিলেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার উৎপল পর্ণা হাজারিকা, কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম কর্নেল এসকে চৌধুরী সহ রেলের এক ঝাঁক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
একলাখী জংশনে গাজোল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং বৈরগাছি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আম চাষীরা বিভিন্ন বিষয়ে দাবি পত্র পেশ করেন। বিশেষ করে আমের মরশুমে যাতে ওই এলাকা থেকে মালদার আম বিভিন্ন জায়গায় কম খরচে পাঠানো যেতে পারে তার জন্য আবেদন জানান আম চাষীরা। গাজোল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গাজোল স্টেশন রোড সহ অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়ন এর উপর জোর দেওয়া হয়। বৈরগাছি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এর পক্ষ থেকে একলাখী জংশনে হাটে বাজারে এক্সপ্রেস, হাওড়া বালুরঘাট এবং হাওড়া কাটিহার ট্রেনের স্টপেজের দাবী জানানো হয়।
দাবীপত্র খতিয়ে দেখে সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেনারেল ম্যানেজার অংশুল গুপ্তা বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ফসল খুব কম খরচে পরিবহনের জন্য চালানো হচ্ছে কিষান রেল। এখানে প্রচুর আম চাষ হয়। আম চাষীরা দাবী জানাচ্ছেন কম খরচে যাতে বিভিন্ন জায়গায় আম রপ্তানি করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। আমচাষীদের উদ্দেশ্যে আমি জানাতে চাই, তারা যদি চান তাহলে বিভিন্ন জায়গায় আম পাঠানোর জন্য কিষান রেল চালু করা যেতেই পারে। এ বিষয়ে তারা যদি আবেদন জানান তাহলে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে একলাখী জংশন অথবা অন্য কোন স্টেশন থেকে কিষান রেল চালানো হবে। তিনি আরও বলেন, গাজোল স্টেশন রোড খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ওটি ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একলাখী জংশনে ট্রেনের স্টপেজ এর বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। ভারতীয় রেলযাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুরক্ষার উপর বেশি জোর দিচ্ছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সমস্ত কোচ কে এলএইচবি করা হবে। তবে সাধারণ মানুষকেও রেলের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিনা টিকিটে কেউ যাতে ট্রেনের সফর না করেন সে বিষয়ে জোর দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে ট্রেনের অনেক কামরা খালি যাচ্ছে। আরও বেশি মানুষ যাতে রেলপথ ব্যবহার করেন তার জন্য আমরা সাধারণ মানুষের কাছে বার্তা দিতে চাই। এলাকার আম চাষী এবং ব্যবসায়ী মহসিন আলি জানালেন, একলাখী জংশন থেকে প্রচুর আম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল এবং ভুটানেও যায় প্রচুর আম। পণ্য পরিবহনের জন্য সে রকম কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আমরা যাত্রীবাহী ট্রেনেই বিভিন্ন জায়গায় আম পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু করোনার সময় যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকার জন্য এবং পরবর্তীকালে বেশ কিছু ট্রেনের স্টপেজ তুলে নেওয়ার জন্য আমরা সে ভাবে আম বাইরে পাঠাতে পারিনি। এদিন জিএম আশ্বাস দিয়েছেন বাইরে আম পাঠানোর জন্য কিষান রেলের ব্যবস্থা করা হবে। কিষান রেলে অনেক কম ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করা হয়। এতে জেলার আম চাষীরা খুবই উপকৃত হবেন। গাজল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক বিধান রায় জানালেন, গাজোলের স্টেশন রোড খুব খারাপ অবস্থায় আছে। যার জেরে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাটি মেরামত করার জন্য এর আগে আমরা ডেপুটেশন দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি। এদিন জেনারেল ম্যানেজারের কাছে আমরা একই দাবীপত্র পেশ করলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন খুব দ্রুত ওই রাস্তা মেরামত করে দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি এবার হয়তো খানাখন্দে ভরা স্টেশন রোড মেরামত করা হবে।