উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২২ শে ফেব্রুয়ারী ২০২২ : মঙ্গলবার : ১২ বছর পরে বাড়ি ফিরলো ছেলে। সৎ বাবার বিরুদ্ধে বিক্রির অভিযোগ উঠলো। ঘটনাটি মালবাজার মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের উত্তর মাঝগ্রাম এলাকার। ১২বছর আগে আব্দুল বাছেদ নিজের স্ত্রী কে রেখে দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে ক্রান্তি যাবে বলে বের হয়। তখন বড় ছেলের বয়স আট এবং ছোট ছেলের বয়স আট ছিল। ক্রান্তি যাবার নাম করে বাড়ি থেকে গেলেও বাড়ি ফিরে আসে নাই আব্দুল বাছেদ। এরপর ক্রান্তি থেকে দুই ছেলে কে জামা কাপড় কেনার নাম করে কলকাতা চলে যান।
হারিয়ে যাওয়া ছেলে আব্দুল রহিম মোল্লা, জানালেন বাবা আমাদের জামা কাপড় কেনার নাম করে কলকাতা নিয়ে যায়। তখন ছোট ছিলাম, ভয় পেতাম বাবা ধমকে, বাধ্য হয়ে চুপ থাকতাম। কলকাতা গিয়ে দাদা কে একটা বাড়িতে কাজের জন্য রেখে দেয় বাবা। আমি বাবার সাথে থাকতাম। বাবা কিছুদিন পর পুনরায় বিয়ে করেন। একদিন বাবা আর বাবার শালী ও আমাকে নিয়ে ঘুরতে নিয়ে যায়। ট্রেনে করে আমরা তিনজন যাচ্ছিলাম কিন্তু কোথাও আমরা নাম ছিলাম না। একদিন দুই দিন ট্রেনেই কেটে যায়। এরপর মাসি(বাবার শালী) ট্রেনের পুলিশকে জানায়। এরপর বাবা পুলিশকে মিথ্যা কথা বলে মাসিকে হাওড়ার ট্রেন ধরিয়ে বাড়ি পাঠিয়েদেন, সেটি এলাহাবাদ স্টেশনের ঘটনা। এরপর আমারও ভয় লাগছিলো, আমাকে আবার কোথায় নিয়ে যাবে বাবা? আমি কান্নাকাটি শুরু করি। লোকজন জড়ো হয়ে যায়। এরপর পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাস করলে আমিও মিথ্যা কথা বলি, উনি আমার বাবা না। তখন বাবা কে পুলিশ জেল নিয়ে যায় আর আমাকে হোমে রাখেন। এলাহাবাদ হোম থেকে আমাকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি হোমে পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে নুরালি মেমোরিয়াল সোশ্যাইটি হোম আমাকে রাখেন। আমি সেখানে পড়াশুনা করে মাধ্যমিক উর্ত্তীর্ন হয়েছি প্রথম বিভাগে। সেখানে আমি আমার বাড়ি পাশে রাজাডাঙ্গা হাই স্কুল নাম বললে আমার বাড়ির পাশে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন হোম কর্তৃপক্ষ। গুগল সার্চ করে স্কুলের নাম পান। তখন হোম কর্তৃপক্ষ জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং ক্রান্তি ফাঁড়ি প্রচেষ্টায় আজ বাড়ি ফিরে আসি। আব্দুল রহিম মোল্লার মা সেফালী বেগম জানালেন আমি নিজেও ছেলে হারিয়ে যাওয়ার জন্য এজাহার করি ক্রান্তি পুলিশ ফাঁড়িতে। সকলের সাহায্যে ১২ বছর পরে ছেলেকে ফিরে পেলাম। তিনি নুরালি মেমোরিয়াল সোশ্যাইটির সুপারটেন্ডেন্ট রুম্পা মুখার্জী উদ্যোগে ছেলে পুনরায় বাড়ি ফিরে পাওয়াতে ধন্যবাদ জানান। দীর্ঘ ১২ বছর পরে ছেলেকে পেয়ে মা সেফালী বেগম সহ পরিবারের সকলে খুবই খুশি। এলাকায় বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।