উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৫ ই মার্চ ২০২২ : শনিবার : করোণা আবহে গত বছর ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল মালদা জেলার অন্যতম অর্থকরী ফল হিসেবে পরিচিত আম ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এবছর আশার আলো দেখছেন তারা। মালদা জেলার ইংরেজবাজার সহ ১৫ টি ব্লক জুড়েই প্রায় ৬০% বাগানে আমের মুকুল ফুটে গিয়েছে। জগৎ বিখ্যাত তথা বিদেশে সুনাম অর্জন করা লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, গোপালভোগ সহ অন্যান্য প্রজাতির আম গাছে ৭০ শতাংশ মুকুল ফুটে গিয়েছে বলে উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিকে মুকুল ফোটার আগে জেলার আমগাছে বৃষ্টির জল পড়ায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে গাছের আগাছা। মুকুল ফোটার মুহূর্তে বৃষ্টির জল মুকুল ফুটতে অনেক সাহায্য করেছে জেলার বাগানগুলোতে। ইতিমধ্যে জেলা উদ্যানপালন দপ্তর এর পক্ষ থেকে কৃষকদের আম গাছ পরিচর্যা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গের যাতে আমের মুকুল নষ্ট করতে না পারে তার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করার নির্দেশ দিচ্ছেন উদ্যানপালন দফতরের কর্তারা। বাগানে নিয়মিত পরিচর্যার জন্য জেলা উদ্যানপালন দফতরের কর্মীরা ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাগানগুলোতে ঘুরে ঘুরে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। চলতি মরসুমে জেলার আম বাগানগুলিতে ব্যাপক আশার আলো দেখছেন আম চাষিরা। আবহাওয়া ঠিক থাকলে এবারও রেকর্ড ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে জেলায় আম চাষ ভালো হয়েছিল। এ বছরও তার থেকে বেশি ফলন হওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন চাষিরা।
মালদা জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে গত মরশুমে মালদা জেলায় মোট ৩১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। আমের ফলন হয়েছিল ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। জেলায় এক হেক্টর প্রতি আমের ফলন ছিল ১১. ৯৩ মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি সব থেকে বেশি ফলন হয়েছিল মালদা মানিকচক ব্লকের। এবছর জেলা উদ্যানপালন দফতরের উদ্যোগে নতুন করে আরও ৪৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তবে কৃষকদের আম গাছে রাসায়নিক প্রয়োগ বন্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তারা। উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্তরিক বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আম চাষের পক্ষে অনুকূল। আমের মুকুল ফোটার আগে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমের পক্ষে অনেকটাই উপকার হয়েছে। তাই সঠিক সময়ে জেলার প্রতিটি বাগানে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। মুকুল ফোটা থেকে আমের গুটি হওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া ঠিক থাকলে আমের ফলন ভালো হবে। গত বছর থেকে এই মৌসুমে আমের ফলন বৃদ্ধির আশা করছি আমরা। তবে সম্পূর্ণটাই নির্ভর করছে জেলার আবহাওয়ার উপরে।