উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১২ ই মার্চ ২০২২ : শনিবার : মানবিক মুখ দেখতে পাওয়া গেল অ্যাম্বুলেন্স চালকের। নাম সাহাজাহান আলম। রাস্তায় পড়ে থাকা রক্তাক্ত এক যুবককে হাসপাতালে পৌছে দিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক সাহাজাহান আলম। এটা শুধু এক দিনের ঘটনা নয়। রাত-বিরাতে যখন তার কাছে ফোন আসে, তখন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যায় বছর ২৫ এর এই অ্যাম্বুলেন্স চালক। বাড়ি ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। অ্যাম্বুলেন্স চালিয়েই চলে সংসার। তবে এরকম অনেক গরীব মানুষকে রাত-বিরাতে হাসপাতালে পৌছে দিয়ে প্রান বাচিয়েছেন এই সাহাজাহান আলম। সব রোগীর কাছ থেকে যে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পান, তেমন নয়। বহু গরীব মানুষকে মানবতার খাতিরে পয়সাও নেয় না এই অ্যাম্বুলেন্স চালক। হিন্দু, মুসলিম সব সমান তার কাছে।
শুক্রবার রাতে মালবাজার মহকুমার ক্রান্তি এলাকায় রাজ্য সড়কে বাইক নিয়ে ররক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো এক যুবক। বেশ কিছুক্ষন রাস্তায় পড়ে থাকলেও ভয়ে কেউ ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সাহস পায়নি। শেষ পর্যন্ত, খবর পাওয়া মাত্র ঘটনা স্থলে ছুটে যায় সাহাজাহান আলম। নিজেই আহত ওই যুবককে নিজের অ্যাম্বুলেন্স করে নিয়ে আসে ওদলাবাড়ি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসায় প্রানে বেচে যায় ওই যুবক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিলিগুড়ি রেফার করা হয়েছে। গুরুতর আহত যুবকের নাম অবিনাশ রায় (২০)। বাড়ি ক্রান্তি ঝাড়পাড়ায়। কি ভাবে এই যুবক দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয়েছে তা জানা যায় নি।
অ্যাম্বুলেন্স চালক সাহাজাহান আলম বলেন, রাত বা দিন আমার কাছে সব সমান। সব সময় মানুষের পাশে থাকতে চাই। আমার জন্য যদি কারো প্রাণ বাঁচে, তা হলে সেটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার। এধরনের বহু রোগী আমি হাসপাতালে নিয়ে আসি। কেউ অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দেয়, কেউ দেয় না, কিন্তু সেটা বড় ব্যাপার নয়। মানুষের প্রাণ বাচানোই আমার কাছে বড় ব্যাপার। রাতে এই আহত যুবককে যখন কেউ হাসপাতালে নিতে ভয় পাচ্ছে, তখন খবর পেয়েই আমি ছুটে যাই। সবাই ভেবেছে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। যখন অ্যাম্বুলেন্স এ তুলি তখনও এই যুবকের কোন জ্ঞান ছিলো না। হাসপাতালে আনতেই জ্ঞান ফেরে যুবকের। আর এতেই শান্তি পেয়েছি। কারন যুবকের প্রাণ বাচাতে পারলাম। জানি না অ্যাম্বুলেন্স এর ভাড়া পাবো কিনা। কিন্তু গরীব ঘরের ছেলেটা প্রাণে বেচে গেলো, এটাই বড় পাওয়া।