উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ১৫ ই মার্চ ২০২২ : মঙ্গলবার : সোমবার সকালের দৃশ্য। ধূপগুড়ি-ময়নাগুড়িগামী ৩১ ডি জাতীয় সড়কে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন এক কিশোরী। তাঁর পেছনে ছুটছেন আরেক মহিলা। খানিকটা পেছনে আরও কয়েকজন। এ যেন অবিকল কোনও সিনেমার দৃশ্য। খানিকটা অবাকই হয়েছিলেন আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ। একসময় কিশোরীকে ধরে ফেলেন ওই মহিলা।
ধীরে ধীরে ভিড় জমতে শুরু করে। সেই সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল পুলিশের ভ্যান। খবর যায় ময়নাগুড়ি থানায়। তারপর ওই কিশোরীর মুখে সবকিছু শুনে হতভম্ব সকলেই। ততক্ষণে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। তাই দিনের আলো ফোটার অপেক্ষায় কোনো রকমে ওই বাড়িতেই থেকে যায় কিশোরী। সকাল হতেই প্রেমিকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা জাতীয় সড়ক ধরে ছুটতে থাকে। সেই দৃশ্য দেখে টনক নড়ে যুবকের পরিবারের। কিশোরী কোনো রকম দুর্ঘটনার মুখে পড়লে তাঁদের ঘাড়ে দোষ পড়বে, সেই আশঙ্কায় তাঁরাও ছুটতে থাকেন তার পেছনে। পুলিশ হাজির হলে মেয়েটির থেকে তার বাড়ির ফোন নম্বর জোগাড় করে। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার পর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, আইনি সহায়ক, এমনকি যুবকের পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে আসেন।
খাগড়াবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক যুবক কেরলে কাজ করতেন। সেই সময় সাপ্টিবাড়ির এক স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হয় তাঁর। কিশোরী জানত, ওই যুবক বাইরে চাকরি করেন। ক্রমে ক্রমে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন ওই যুবক। রবিবার জল্পেশ মেলা প্রাঙ্গণে দেখা করে ফুচকা খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দুজনে। দেখাও হয়, ফুচকা খাওয়াও হয়। সেখানেই হাতে হাত রেখে সাতজন্ম একসঙ্গে চলার সংকল্প করেন দুজনে। এত ঘটনার পর ভেঙে পড়েছে কিশোরীটি। তার কথায় , ফোনেই আলাপ, কখনও দেখা হয়নি। আমাকে জল্পেশ মেলায় ফুচকা খাওয়াবে বলেছিল। ফুচকা খেতে বিয়ের কথা বলতেই রাজি হই। কিন্তু ওর বাড়ি গিয়ে দেখি বাড়িতে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে, এটা আমি জানতামই না। আগে জানলে ওর সঙ্গে নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্নই দেখতাম না। এখন কালীরহাটে ওই যুবকের বাড়িতে পৌছে কি করবে, সেই বিষয়ে চিন্তায় পড়েছে সে। ওই বাড়ি গিয়ে সে জানতে পারে, তার প্রেমিক বিবাহিত, এমনকি তাঁর দুই সন্তান রয়েছে। কিশোরীকে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবকের স্ত্রী। তাঁর সঙ্গে পরিবারের অন্যরাও ওই ছাত্রীকে অনেক কথা শোনান বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে প্রেমিকাটি জানায়, ফোনেই আলাপ, কখনও দেখা হয়নি। আমাকে জল্পেশ মেলায় ফুচকা খাওয়াবে বলেছিল। ফুচকা খেতে বিয়ের কথা বলতেই রাজি হই। এরপর ছেলেটির সাথে তার বাড়িতে পৌছে দেখি বাড়িতে তার বউ ও দুই সন্তান রয়েছে। আমি জানতাম না, সে বিবাহিত, তাদের বাড়িতে পা দিতেই তার বাড়ির লোকজন আমাকে গালাগাল দিতে শুরু করে। ছেলেটি বিবাহিত জানলে তার সাথে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখতাম না।