উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ২৩ শে মার্চ ২০২২ : বুধবার : টাকা নিয়ে ভর্তির অভিযোগ উঠলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য শিক্ষা ও প্রশাসনিক মহলে। মোটা টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তি করছেন প্রধান শিক্ষিকা এই অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের দুই অভিভাবকের। মানিকচক এক নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক, ডি.পি.এস.সি. চেয়ারম্যান, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) কে লিখিত অভিযোগ জমা করে অভিভাবকরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জেলা শিক্ষা দপ্তর ।
মানিকচক শিক্ষা নিকেতন হাই স্কুল বর্তমানে মানিকচক তথা মালদা জেলার মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আর এই ক্যাম্পাসের মধ্যেই মানিকচক ম্যানেজড্ প্রাথমিক বিদ্যালয় এর অবস্থান। ২০১৪ সালের আর.টি.আই. অ্যাক্ট অনুযায়ী মানিকচক ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুল শিক্ষা নিকেতন লাগোয়া স্কুল হওয়ায় এই প্রাইমারি স্কুলের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা নিকেতনে ক্লাস ফাইভে ভর্তির সরাসরি সুযোগ পেয়ে থাকে। তাই শিক্ষা নিকেতন স্কুলে নিজেদের ছেলে মেয়েকে পড়াতে টার্গেট করতে এই প্রাথমিক বিদ্যালয় নিজেদের ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করতে মরিয়া অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন মানিকচক ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খাতুন। তাদের অভিযোগ সরকারি নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করে বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোটা টাকার বিনিময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি চালিয়ে গেছেন প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খাতুন। এই ব্যাপারে কয়েক বছর ধরে এলাকায় কানাঘুষো চললেও লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ করেননি কোন অভিভাবকরা। টাকা নিয়ে ভর্তি সংক্রান্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ করেন মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মূটোলা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ক্ষৌরকার শ্যামল প্রামানিক। তিনি তার মেয়েকে মানিকচক ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খাতুন এর সঙ্গে দেখা করেন। জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খাতুন শ্যামল বাবু কে তার এনায়েতপুরের বাসগৃহে এসে দেখা করতে বলেন। শ্যামল বাবু একজন জনৈক শিক্ষক কে সঙ্গে নিয়ে প্রধান-শিক্ষিকার এনায়েতপুরের বাড়িতে যান। অভিযোগ শিশু শ্রেণীতে তার মেয়েকে ভর্তি করা বাবদ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খাতুন। শ্যামল বাবু জানান, আমি প্রধান শিক্ষিকাকে অনুরোধ করে বলি আমি সামান্য নাপিতের কাজ করি। আমার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো নয় ।আমি আপনাকে ১০ হাজার টাকা দেব। আপনি দয়া করে আমার মেয়েকে ভর্তি করে নেন। কিন্তু তার দাবি মত টাকা দিতে না পারায় বেশ কয়েক মাস পর ঘোরানোর পর আমাকে সাফ জানিয়ে দেন আমার মেয়ের ভর্তি হবে না। কিন্তু তার দাবি মত টাকা দিতে পারলে আমার মেয়ে এখন ওই স্কুলে পড়তে পারতো।
এই বিষয়ে মানিকচক এক নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সঞ্চিতা মন্ডল জানান, আমরা এতদিন কোন রকম লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে এবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা জেলার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।